📚 বিষবৃক্ষ 📚
✒️ লেখক : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮ – ১৮৯৪)
✒️ লেখক পরিচিতি : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের সার্থক উপন্যাসের উদগাতা। রবীন্দ্রনাথের কথায়, “বঙ্কিম বঙ্গসাহিত্যে প্রভাতের সূর্যোদয়ের বিকাশ করিলেন।” ১৮৫৬সালে ‘ললিত তথা মানসে’ কাব্যগ্রন্থ দিয়ে বাংলা সাহিত্যে হাতেখড়ি হলেও ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে ‘দূর্গেশনন্দিনী’ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে বাংলা উপন্যাস সাহিত্যে তার আবির্ভাব। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পাশ্চাত্য সাহিত্যে প্রভাবিত হয়ে তিনি প্রথম ‘Rajmohon’s wife’ নামে ইংরাজীতে প্রথম উপন্যাস রচনা করেন যার ঐতিহাসিক তাৎপর্য না থাকলেও প্রথম উপন্যাস হিসাবে প্রাসঙ্গিকতা থেকে যায়। মোট ১৪টি বাংলা উপন্যাস রচনার মধ্য দিয়ে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ ও প্রতিষ্ঠা করেছেন। তবে বাংলা সাহিত্যক্ষেত্রে ঔপন্যাসিকের পাশাপাশি অমরত্ব লাভ করেছেন পত্রিকার সম্পাদক রূপে। ১৮৭২ খ্রি: ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকার মধ্য দিয়ে বাংলার সাহিত্যের নানাদিক তিনি উন্মোচন করেছিলেন। এছাড়া নানা গদ্য প্রবন্ধের মধ্য দিয়ে বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর সুচিন্তিত মতামত, দর্শন প্রকাশ করেছেন। সাধারণত তাঁর রচনার উপজীব্য বিষয় ছিল ঊনবিংশ শতাব্দীর সমাজ।
✒️ প্রথম প্রকাশ :
◆ পত্রিকায় :- বঙ্গদর্শন পত্রিকায় বৈশাখ ১৮৭২ খ্রি: থেকে চৈত্র ১৮৭৩ খ্রি: পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
◆ গ্রন্থাকারে :- ১৮৭৩ খ্রি: ১লা জুন প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
✒️ উৎসর্গ : জগদীশনাথ রায়কে
✒️ প্রকার : সামাজিক উপন্যাস
✒️ পরিচ্ছেদ সংখ্যা – ৫০
✒️ বিষয়বস্তু : ‘বিষবৃক্ষ’ বঙ্কিমচন্দ্রের চতুর্থ বাংলা উপন্যাস ও প্রথম সামাজিক উপন্যাস। এবং ‘বঙ্গদর্শন’ পর্বের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় উপন্যাস। রবীন্দ্রনাথের কথায় , “বঙ্গদর্শনে যে জিনিসটা সেদিন বাংলাদেশের ঘরে ঘরে সকলের মনকে নাড়া দিয়েছিল, সে হচ্ছে ‘বিষবৃক্ষ’ উপন্যাস।
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রেক্ষাপটে বিধবাবিবাহ ও বহুবিবাহ এই দুই সমস্যার আধারে বঙ্কিমচন্দ্র ‘বিষবৃক্ষ’ উপন্যাসটি রচনা করেছেন।
ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রেক্ষাপটে বিধবাবিবাহ ও বহুবিবাহ এই দুই সমস্যার আধারে বঙ্কিমচন্দ্র ‘বিষবৃক্ষ’ উপন্যাসটি রচনা করেছেন। গোবিন্দপুর গ্রামের জমিদার নগেন্দ্র ও সূর্যমুখীর সংসারে কুন্দনন্দিনীর আগমনকে কেন্দ্র করে ত্রিভূজ প্রেমের আবর্তে বঙ্কিম সামাজিক সমস্যাগুলিকে উপস্থাপিত করেছেন। রিপুর প্রাবল্য ও রূপজ মোহের করুণ পরিণতি অঙ্কন করে সমাজমনস্কতার পরিচয় দিয়েছেন বঙ্কিম। আধুনিক জীবন যে দ্বন্দ্বমুখর, বঙ্কিমের ‘বিষবৃক্ষ’ প্রথম তার বার্তা ঘোষণা করল।
■ অন্যান্য –
‘বিষবৃক্ষ’ – বঙ্কিমচন্দ্রের চতুর্থ তম উপন্যাস।
◆ সমাজিক শ্রেণির উপন্যাস।
◆ ‘বিষবৃক্ষ’ উপন্যাসটি প্রথম ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে ইংরাজিতে প্রকাশিত হয়।
◆ উপন্যাসটি অনুবাদ করেন মিরিয়ম.এস.নাইট, ‘The Poison Tree’ নামে।
◆ ‘বিষবৃক্ষ’ উপন্যাসটি হিন্দি ও সুইডিশ ভাষাতেও অনুবাদ করা হয়।
◆ উপন্যাসটির নাট্যরূপ দিয়েছিলেন – অমৃতলাল বসু।
◆ উপন্যাসটি বঙ্গদর্শনে প্রকাশকালে যে শব্দ দুটি বড় হরফে ছাপা হয়েছিল – ‘বিষবৃক্ষ’ ও ‘অমৃত’।
◆ উপন্যাসটির কাহিনির বর্ণনা শুরু হয়েছে জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে।
■ চরিত্র পরিচয় ■
নগেন্দ্র দত্ত (৩০ বছর) – জমিদার
সূর্যমুখী (২৬) – নগেন্দ্রর স্ত্রী
কমলমণি (১৮) – নগেন্দ্রর বোন
শ্রীশচন্দ্র মিত্র – কমলমণির স্বামী
সতীশচন্দ্র – কমলমণির ছেলে
কুন্দনন্দিনী (১৩) – তারাচরণের বিধবা স্ত্রী
তারাচরণ (২৬) – সূর্যমুখীর পালিত ভাই
শ্রীমতী – তারাচরণের মা
চাঁপা(১৩) – কুন্দর প্রতিবেশী সঙ্গিনী
বিনোদ ঘোষ – কুন্দর মেসো
দেবেন্দ্র – নগেন্দ্রর জ্ঞাতি ভাই
হৈমবতী – দেবেন্দ্রর স্ত্রী
সুরেন্দ্র – দেবেন্দ্রর মাতুল
হরদেব ঘোষাল – নগেন্দ্রর বন্ধু
গণেশ – দেবেন্দ্রর শ্বশুর
হীরা – নগেন্দ্রর বাড়ির প্রধান দাসী
কুমুদ – নগেন্দ্রর নতুন চাকর
রহমত মোল্লা – নগেন্দ্রর মাঝি
কৌশল্যা – নগেন্দ্রর বাড়ির অন্য দাসী
মালতী – দেবেন্দ্রর দাসী
শিবপ্রসাদ শর্মা – সূর্যমুখীর উদ্ধারকর্তা
রামকৃষ্ণ রায় – সূর্যমুখীর বৈদ্য
মাধবচন্দ্র গোস্বামী – রাণীগঞ্জের ব্রহ্মচারী
হরমণি – পীড়িত সূর্যমুখীর আশ্রয়দাত্রী
হরিদাসী বৈষ্ণবী – দেবেন্দ্রর ছদ্মবেশী
শ্রমহারী – দেবেন্দ্রর চাকর
■ স্থান পরিচয় ■
গোবিন্দপুর, জেলা হরিপুর – নগেন্দ্রর বাড়ি
ঝুমঝুমপুর – কুন্দর বাড়ি
শ্যামবাজার – কুন্দর মাসীর বাড়ি
কোন্নগর – সূর্যমুখীর বাবার বাড়ি
দেবীপুর – দেবেন্দ্রর বাড়ি
কলকাতা – কমলমণির বাড়ি
হরিপুর – হৈমবতীর বাবার বাড়ি
মধুপুর – হরমণির বাড়ি
রাণীগঞ্জ – মাধবচন্দ্র গোস্বামীর বাড়ি
কামারহাটা – হীরা তার আয়িকে পাঠায়
পুরো নেট এর সিলেবাস ধরে উপরোক্ত আলোচনাগুলোর মতো আরো আলোচনা পেলে উপকৃত হতাম।
ধন্যবাদ কিছুটা হলেও সাহায্য লাভ এ আপনাদের আলোচনা সহায়ক হবার জন্য।