মাধ্যমিক বাংলা সিলেবাস থেকে –
পথের দাবী – শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
★ “তাছাড়া এত বড় বন্ধু!” – ব্যাখ্যা
মেয়েটি অপূর্বর বাড়িতে চুরির খবর এবং চুরি হবার পর কী কী চুরি গেছে তার তালিকা করে ঘরের সমস্ত জিনিসপত্র গুছিয়ে দিয়ে যথার্থ বন্ধুর পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু অপূর্ব বা তার চাকর তেওয়ারী মেয়েটির সহায়তাকে সহজভাবে নিতে পারেনি, তাই অপূর্ব তলওয়ারকারকে জানায় –
“আমারও অনুমান কতকটা তাই, চুরি না করুক সাহায্য করেছে।”
সমগ্র উপন্যাস থেকে জানতে পারি, হিন্দু গোঁড়া রক্ষণশীল পরিবারের অপূর্ব প্রথমত, মেয়েটি খ্রিস্টান পরিবারের অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় তার সংস্রব যেমন মেনে নিতে পারেনি, দ্বিতীয়ত, মেয়ে হয়ে বাইরের পৃথিবীতে এতটা কার্যকুশল হওয়াকেও সে ঘৃণার চোখে দেখেছে। এই মনোভাবে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে ভারতীর প্রতি বিদ্বেষ বাড়িয়ে তুলেছে। অর্থাৎ এখানে মেয়েটি বা ভারতীকে ‘এত বড় বন্ধু’ বলার মধ্য দিয়ে অপূর্বর ব্যঙ্গ ও বিদ্বেষ প্রকাশ পেয়েছে।
★ “কেবল আশ্চর্য সেই রোগা মুখের অদ্ভূত দুটি চোখের দৃষ্টি” – ব্যাখ্যা
‘পথের দাবী’ উপন্যাসের নির্বাচিত অংশে গিরীশ মহাপাত্রের বর্ণনা অনুযায়ী – বয়স ত্রিশ, ফরসা রঙ রোদে পুড়ে তামাটে হয়েছে এবং ক্ষয়রোগে সে এতটাই আক্রান্ত এবং এমনি হাঁপাচ্ছে যে অপূর্ব আশঙ্কা করেছে যে – “সংসারে মেয়াদ বোধ করি বেশি দিন নাই।”
অপরদিকে, আমাদের শরীর এবং মনের আয়না হল চোখ, রুগ্ন মৃত্যুপথযাত্রী গিরীশ মহাপাত্রের চোখ কিন্তু তার শারীরিক অবস্থার অবনতির বদলে গভীরতা এবং দৃঢ়তার পরিচয় দিচ্ছে। অপূর্বর কথায় –
“অত্যন্ত গভীর জলাশয়ের মতো” সেই চোখ দুটোতেই যেন ক্ষীণ প্রাণশক্তি লুকানো আছে, এবং তার দৃঢ়তা এত বেশি যে মৃত্যুও সেখানে প্রবেশ করতে ভয় পায়।
শারীরিক অবস্থার সঙ্গে চোখের দৃষ্টির এই অসংলগ্ন তা ধরিয়ে দিতে চেয়েছেন শরৎচন্দ্র, এই অসংলগ্নতার জেরেই অপূর্বরও চোখের দৃষ্টি দুটিকে ‘অদ্ভূত’ বলে মনে হয়েছে। আসলে শরৎচন্দ্র অপূর্বকে নয়, পাঠককে ধরিয়ে দিতে চেয়েছেন গিরীশ মহাপাত্রের ছদ্মবেশের স্বরূপ।
[ অপূর্ব চোখ দেখে কখনোই বুঝতে পারেনি যে, ইনি সব্যসাচী মল্লিক। ‘পথের দাবী’ উপন্যাসের একাদশ পরিচ্ছেদে ‘পথের দাবী’ সমিতিতে ভারতীর সূত্রে অপূর্ব গিয়ে দেখে এই গিরীশ মহাপাত্রই আসলে সব্যসাচী মল্লিক।]
Really very useful
Very very essential
Very essential for students.
I want suggestions