কবিতা সিংহ ও তাঁর কবিতা
পর্ব – ১
● পাঁচের দশকের একজন স্বনামধন্য কবি কবিতা সিংহ। তিনি নিজেকে ‘মহিলা কবি’ নয়, কবি হিসাবে স্বীকৃতি পেতে চাইতেন।
● কবিতা সিংহের কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা – ৩টি।
১) সহজ সুন্দরী (১৯৬৫ খ্রি:)
◆ প্রকাশক – বিমল রায়চৌধুরী
◆ প্রচ্ছদ – পূর্ণেন্দু পত্রী
◆ উৎসর্গ – বান্ধবী তপতীকে
◆ প্রকাশের সময় দাম ছিল – ৩টাকা।
২) কবিতা পরমেশ্বরী (১৯৭৬ খ্রি:)
◆ প্রকাশক – সমরেন্দ্র দাস
◆ প্রচ্ছদ – পূর্ণেন্দু পত্রী
◆ উৎসর্গ – স্বামী বিমল রায়চৌধুরী
◆ প্রকাশের সময় দাম ছিল – ৫টাকা।
৩) হরিণা বৈরী (১৯৮৩ খ্রি:)
◆ প্রকাশক – কুনাল কুমার রায়
◆ প্রচ্ছদ – চারু খান
◆ উৎসর্গ – শম্ভু মিত্র
◆ প্রকাশের সময় দাম ছিল – ১০টাকা।
‘হরিণা বৈরী’ গ্রন্থের ভূমিকায় বলেছেন –
“প্রায় কুড়ি বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিল আমার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সহজ সুন্দরী'(১৯৬৫), তার দশ বছর পরে ‘কবিতা পরমেশ্বরী’ (১৯৭৬), ‘হরিণা বৈরী’তে পৌঁছাতে আরও আট বছর লেগেছিল। এর কারণ কিন্তু কবিতার সংখ্যা – স্বল্পতা নয়, বরং একাধারে প্রাচুর্য এবং বর্জন প্রবণতা। দ্বিধাহীনভাবে বলতে চাই শ্রী বিরাম মুখোপাধ্যায়ের মতো একজন সম্পূর্ণত কবিতামনস্ক সাহিত্যিকের সময়োচিত গভীর আগ্রহই ‘হরিণা বৈরী’ কে সম্ভব করেছে।…”
■ রাজেশ্বরী নাগমণিকে নিবেদিত ■
আজীবন লজ্জা ঢেকে দেবে বলে তার সেই একান্ত পুরুষ
নগ্ন ওই দময়ন্তী, ফেলে গেলে পথের ধূলায়
রক্ষকের হাতে খুন বিশ্বাসের হাতে খুন
ভাগ্যে তোর ছিল রাজেন্দ্রাণী
আহা তোর সব লজ্জা ঢেকে দিল দয়াময় ডোম।
মাথার ভিতরে এক ক্রুদ্ধ ভ্রমর তার তীব্র হুলে
ওই ছবি
ওই তোর পথের শায়িত মৃতদেহ!
কীভাবে তক্ষিত করে, কীভাবে বেঁধায় ওই মুখ
ও তো তোর মুখ নয় কেবল একার!
পুরুষ সর্বস্ব চায় নিজের কবলে, নিচে,
পক্ষপুটে
শাখার তলায়
শৃগাল যেভাবে চায় সমস্ত নাগাল, দূর
সপ্রতিভ রসাল দ্রাক্ষার!
কীটেরা যেভাবে চায় দষ্ট করে দিতে সব
অর্জিত প্রজ্ঞান।
অজেয় শিখরগুলি আহা তার করুণ বামন ঘুম
বড় নষ্ট করে
অদেখা অরণ্যগুলি, আহা তার স্বপ্ন হিসাবে মাপে
এনে দেয় রূঢ় বিশৃঙ্খলা।
পথ আরো আছে অন্যদিকে
যোনি স্তন সর্বস্ব সুখের, ঘুমের এক মাংসের
আঙটিতে গড়া দারুণ পিচ্ছিল।
যদি ফের জন্ম হয় এইবার ওই পথ তোর
পথ এই অন্যদিকে সুখের পতাকা বেঁধে
নিশ্চিন্ত মাংসল
ভ্রুণাবস্থায় নিজে, নিজের নারীত্ব থেকে ছিন্ন
হওয়া তোমার নিদান
ফেরো এক লিঙ্গহীন বস্তুর জাঙালে।
না’হলে পুরানো পথ ব্রাত্য যাত্রা একাকী ভয়াল
না’হলে নিয়তি আছে সেই এক অমোঘ হত্যার ক্রূর হাত
যার নাম হন্তারক, যার নাম হিংস্র পুরুষ।।
(সুশিক্ষিতা রাজেশ্বরী নাগমণিকে বিষ ইনজেকশনে নিহত করে উলঙ্গ অবস্থায় পথে ফেলে দেওয়া হয়।)
★ প্রশ্নোত্তর আলোচনা –
১) ‘রাজেশ্বরী নাগমণিকে নিবেদিত’ কবিতায় কাদের হাতে খুনের কথা বলা আছে ?
রক্ষকের হাতে, বিশ্বাসের হাতে
২) ‘রাজেশ্বরী নাগমণিকে নিবেদিত’ কবিতায় সব লজ্জা কে ঢেকে দিয়েছিল ?
দয়াময় ডোম
৩) “মাথার ভেতর এক ক্রুদ্ধ _” – শূন্যস্থান পূরণ করো।
ভ্রমর
৪) ‘রাজেশ্বরী নাগমণিকে নিবেদিত’ কবিতায় কে রসাল দ্রাক্ষার নাগাল পেতে চায় ?
শৃগাল
৫) ‘রাজেশ্বরী নাগমণিকে নিবেদিত’ কবিতায় কীটেরা কী দষ্ট করে দিতে চায় ?
অর্জিত প্রজ্ঞান
৬) অমোঘ হত্যা, ক্রদ্ধ ভ্রমর, ক্রূর হাত, রূঢ় বিশৃঙ্খলা, তীব্র হুল – ক্রমানুসারে সাজাও।
ক্রুদ্ধ ভ্রমর, তীব্র হুল, রূঢ় বিশৃঙ্ঘলা, অমোঘ হত্যা, ক্রূর হাত
৭) ‘রাজেশ্বরী নাগমণিকে নিবেদিত’ কবিতায় পুরুষ কথাটি কতবার আছে ?
৩ বার
৮) ‘রাজেশ্বরী নাগমণিকে নিবেদিত’ কবিতায় পথের প্রসঙ্গ কতবার আছে ?
৬ বার
৯) স্তম্ভ –
একান্ত / হিংস্র – পুরুষ
ক্রুদ্ধ – ভ্রমর। তীব্র – হুল
রসাল – দ্রাক্ষা অর্জিত – প্রজ্ঞান
অজেয় – শিখর। বামন – ঘুম
রূঢ় – বিশৃঙ্খলা। সুখের – পতাকা
পুরানো – পথ ব্রাত্য – যাত্রা
অমোঘ – হত্যা ক্রূর – হাত
১০) ‘রাজেশ্বরী নাগমণিকে নিবেদিত’ কবিতায় কবি হিংস্র পুরুষকে কী নামে চিহ্নিত করেছেন ?
হন্তারক
■ হরিণা বৈরী ■
অঘোর গৈরী পথ বৈরাগিনী
পথ না আগুন নদী ক্রূর – গামিনী
পোড়ে চুল জ্বলে ত্বক
নাঙা পদ ধকধক
জানে না সে ঘোরে ক্রোধ লোভী কামিনী
শাঁখিনী হাকিনী ধায় খরডাকিনী
কোথা রে হরিণ তুই চিন্তামণি ?
বৈরী আপনা মাসে তোর হরিণী!
হরিণী না জানে ঘর, কোথা রে হরিণ ?
একতারা হয়ে যায় তার ছিঁড়ে বীণ্
শিখা খায় লকলক
আগুনে আহুতি হোক
চোখ নাক স্তন ত্বক মাংসের ঋণ
বৈরী আপনা মাসে হরিণা অচিন্
একেলা নিলয় খোঁজে কোথা রে হরিণ ?
★ প্রশ্নোত্তর আলোচনা –
১) ‘হরিণাবৈরী’ কবিতায় চরণ কয়টি ?
১৫টি
২) ‘হরিণাবৈরী’ কবিতায় স্তবক কয়টি ?
৪
৩) ‘হরিণাবৈরী’ কবিতায় ‘হরিণা’ কথাটি কতবার আছে ?
১বার
৪) ‘হরিণাবৈরী’ কবিতায় ‘বৈরী’ কথাটি কতবার আছে ?
২বার
৫) ‘হরিণাবৈরী’ কবিতায় কাকে চিন্তামণি বলা হয়েছে ?
হরিণ
৬) ‘হরিণাবৈরী’ কবিতায় ‘হরিণ’ কথাটি কতবার ব্যবহৃত হয়েছে ?
৩ বার
৭) ‘হরিণাবৈরী’ কবিতায় কোন বাদ্যযন্ত্রের উল্লেখ আছে ?
একতারা, বীণ
৮) “একেলা _ খোঁজে কোথা রে হরিণ ?” – শূন্যস্থান পূরণ করো।
নিলয়
৯) শাঁখিনী, বৈরাগিনী, খরডাকিনী, হাকিনী – ক্রমানুসারে সাজাও।
বৈরাগিনী, শাঁখিনী, হাকিনী, খরডাকিনী
১০) হরিণ, হরিণা, হরিণী – ‘হরিণাবৈরী’ কবিতা অনুযায়ী সঠিক ক্রম চিহ্নিত করো।
হরিণ, হরিণী, হরিণা
১১) ‘বৈরী আপনা মাসে তোর হরিণী!’ – লাইনটি ‘হরিণাবৈরী’ কবিতার কততম পঙক্তি ?
৮নং
■ প্রেম তুমি ■
প্রেম, তুমি তাহাকে চেননি,
সে বিম্ব যে তোমারি
তুমি
ফিরে তাকালে না।
তুমি শুধু দন্তে-ওষ্ঠ চলে গেলে মূঢ় অবিশ্বাসী
তুমি শুধু চোখে হাত চাপা দিয়ে অন্ধ হলে
মুখ দেখালে : না।
প্রেম, তুমি কাকে যে কলঙ্ক দাও ?
দর্পণবিহীন তুমি, জানো না কাহার ছায়া সম্মুখে দাঁড়ানো?
ও কি সত্য? ও কি ধ্রুব? কেন তুমি অঙ্গুলিলেহনে তাকে ছুঁয়ে দেখলে না?
তবু সে অদ্ভুত জানে তুমি তার মুখে অগ্নি দেবে
তবু সে নিশ্চিত জানে শেষ অগ্নি বড় সত্যবাদী
তোমার অগ্নির জন্য বসে থাকা তাহার নিয়তি।
★ প্রশ্নোত্তর আলোচনা –
১) ‘প্রেম তুমি’ কবিতায় ‘প্রেম’ কথাটি কতবার আছে ?
২বার
২) ‘প্রেম তুমি’ কবিতায় ‘তুমি’ কথাটি কতবার আছে ?
৮ বার
৩) ‘প্রেম তুমি’ কবিতায় ‘প্রেম, তুমি’ কথাটি কতবার আছে ?
২বার
৪) ‘প্রেম তুমি’ কবিতায় স্তবক কটি ?
৫
৫) ‘প্রেম তুমি’ কবিতার চরণ সংখ্যা কয়টি ?
১৪
৬) ‘তবু সে নিশ্চিত জানে’ – কী জানে ?
শেষ অগ্নি বড় সত্যবাদী
৭) “তোমার _ জন্য বসে থাকা তাহার নিয়তি” – শূন্যস্থান পূরণ করো।
অগ্নির
৮) ‘প্রেম তুমি’ কবিতায় উল্লেখিত সাধু শব্দের উল্লেখ করো।
তাহার, কাহার, তাহাকে, অগ্নি, বিম্ব, দন্ত, ওষ্ঠ, সম্মুখে ইত্যাদি
৯) চোখ, মুখ, হাত, ছায়া – ‘প্রেম তুমি’ কবিতা অনুযায়ী ক্রমানুসারে সাজাও।
চোখ, হাত, ছায়া, মুখ
১০) ‘প্রেম, তুমি কাকে যে কলঙ্ক দাও?” – পঙক্তিটি ‘প্রেম তুমি’ কবিতার কততম স্তবক ?
৩ নম্বর
১১) ‘প্রেম তুমি’ কবিতায় প্রেমকে কবি কোন বিশেষণে বিশেষিত করেছেন ?
দর্পণবিহীন
please give me pdf net bengali topic.I see your website of our net note pdf.very nice and helpful.
Plz send password..