মেঘনাদবধ কাব্য – মাইকেল মধুসূদন দত্ত
প্রাসঙ্গিক তথ্য আলোচনা
★ রচনা ও প্রকাশকাল ★
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র প্রথম খন্ড প্রকাশিত হয় – ১৮৬১ সালের জানুয়ারি মাসে, ২২শে পৌষ ১২৬৭ বঙ্গাব্দে।
● কাব্যের প্রথম খন্ডে অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল – ১ম থেকে ৫ম সর্গ।
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয় – ১৮৬১ সালের মে-জুন মাসে।
● কাব্যের দ্বিতীয় খন্ডে অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল – ৬ঠ থেকে ৯ম সর্গ।
● ‘মেঘনাদ বধ কাব্যে’র দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করেন – হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র দুটি খন্ড হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারা সম্পাদিত হয়ে টীকা ও ভূমিকা সহ যথাক্রমে প্রকাশিত হয় – ১২৬৯ ও ১২৭০ বঙ্গাব্দে।
● মেঘনাদ বধ কাব্যের অখন্ড সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ২০ শে জুলাই, হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পাদনায়।
★ আখ্যাপত্র ও উৎসর্গ ★
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র প্রথম খন্ডের আখ্যাপত্রটি সংগ্রহ করা যায়নি।
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র দ্বিতীয় খন্ডের আখ্যাপত্রে যে শ্লোক ছিল –
“কৃতবাগদারে বংশোস্মিন পূর্ব্বসুরিভিঃ
মনৌবজ্র সমুৎকীর্ণে সূত্রস্যে কাস্তি মে গতিঃ।”
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র প্রথম সংস্করণের ব্যায়ভার বহন করেছিলেন – দিগম্বর মিত্র।
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত উৎসর্গ করেছিলেন – দিগম্বর মিত্রকে।
● পরবর্তীকালে কবির দিগম্বর মিত্রর সঙ্গে কাব্য প্রকাশে ব্যায়ভারকে কেন্দ্র করে মতভেদ দেখা দিলে মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র তৃতীয় সংস্করণ থেকে উৎসর্গ পত্রটি বর্জন করেন।
★ অনুবাদ ★
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র ইংরাজি অনুবাদ প্রকাশিত হয় ১৮৭৯ খ্রি: ১৫ই আগস্ট।
● অনুবাদটি মার্জনা করেছিলেন – রেভারেন্ড লালবিহারী দে।
● অনুবাদটি প্রধানত গদ্যে হয়েছিল এবং এর শেষ হয়েছিল মেঘনাদের পতনে।
● অনুবাদটির পৃষ্ঠাসংখ্যা – ৯৫
● অনুবাদটি প্রচারিত হয় – উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক।
● সমগ্র ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ ১৮৯৯ খ্রি: ইংরাজি ব্ল্যাঙ্ক ভার্স-এ আক্ষরিকভাবে অনুবাদ করা হয়, অনুবাদকের নাম হিসাবে উল্লেখ ছিল – U.S
● অনুবাদটির পৃষ্ঠাসংখ্যা ছিল – ৩ + ৬ + ১৯২ + ৭।
● অনুবাদটির ১৯০৭ খ্রি: পূণর্মুদ্রণ হলে সেখানে অনুবাদকের সম্পূর্ণ পরিচয় পাওয়া যায় এই মর্মে –
“Umesh Chandra Sen of the Provincial Judical Service.”
● ১৯২৬ খ্রি: বেনারস থেকে ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র অনুবাদ করেন – রাজেন্দ্রনাথ সেন।
● হিন্দি ভাষায় ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র অনুবাদ করেন মৈথিলীশরণ গুপ্ত, ১৯২৭খ্রি:।
● মণিপুরী ভাষায় ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র প্রথম অনুবাদ করেন হাওয়াই রাম নবদ্বীপচন্দ্র সিং। তিনি প্রথম ৬টি সর্গ অনুবাদ করেন। তাঁর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করেন শ্রী এন মীনকেতন সিং। কিন্তু তার অনুবাদ জনপ্রিয় হয়নি।
★ অভিনয় সম্পর্কিত তথ্য ★
● ১৮৭৫ খ্রি: মার্চ মাসে বেঙ্গল থিয়েটারে ‘মেঘনাদ বধ কাব্যে’র নাট্যরূপ প্রদর্শিত হয়।
● ১৮৭৭ খ্রি: গ্রেট ন্যাশানাল থিয়েটারের ( পরিবর্তিত নামকরণ ন্যাশানাল থিয়েটার ) প্রথম অভিনীত নাটক মেঘনাদ বধ কাব্য, ৫ অঙ্কে সমাপ্ত।
● গিরিশচন্দ্র ঘোষ অমিত্রাক্ষর ছন্দে নাটকটিকে নাটকাকারে গ্রন্থিত করেছিলেন।
● ১৮৮৯ খ্রি: জানুয়ারি মাসে এই নাট্যরূপটিকে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন উপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, গ্রন্থের পৃষ্ঠা সংখ্যা – ৬৮।
★ প্যারোডি ★
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র প্যারোডি রচনা করেছিলেন – ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও জগবন্ধু ভদ্র।
● ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত প্যারোডি – বাঙালির ভারত উদ্ধার কাব্য।
● জগবন্ধু ভদ্র রচিত প্যারোডি – ছুচ্ছুন্দরীবধ কাব্য। কাব্যটি প্রকাশিত হয় শিশির কুমার ঘোষের অমৃতবাজার পত্রিকায়, ১২ই আশ্বিন, ১২৭৫ সন।
● সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের অনুরোধে সজনীকান্ত দাস ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র প্রথম সর্গের কয়েক ছত্র অনুবাদ করেছিলেন।
★ কাব্য সম্পর্কিত তথ্য ★
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র রচনাকালীন যে কাব্য কবি ছাপাতে দেন – ব্রজাঙ্গনা কাব্য।
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র দ্বিতীয় ও তৃতীয় সর্গ রচনার মাঝে ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটক রচনা করেন।
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’ বর্ণিত ঘটনার বিস্তার – ৩দিন ২রাত্রি।
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র সর্গ সংখ্যা – ৯টি
সর্গ সর্গ নাম
১ম অভিষেক
২য় অস্ত্রলাভ
৩য় সমাগম
৪র্থ অশোকবন
৫ম উদ্যোগ
৬ঠ বধ
৭ম শক্তিনির্ভেদ
৮ম প্রেতপুরী
৯ম সংস্ক্রিয়া
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র দীর্ঘতম সর্গ – অষ্টম।
● ‘মেঘনাদবধ কাব্যে’র ক্ষুদ্রতম সর্গ – নবম।
★ কাব্য সম্পর্কিত উল্লেখযোগ্য মতামত ★
● “বাঙ্গালা সাহিত্যে এবম্প্রকার কাব্য উদিত হইবে, বোধ হয় সরস্বতীও স্বপ্নে জানিতেন না”
– কালীপ্রসন্ন সিংহ।
● “বস্তুত এই কাব্যটি এশিয়ারূপ জনিতা ও ইউরোপরূপ জনয়িত্রীর সন্তান স্বরূপ”
– রাজনারায়ণ বসু।
● “একথা সত্য বাংলা সাহিত্যে মেঘনাদ বধ কাব্য তার দোসর পেল না, সম্পূর্ণ একলা রয়ে গেল।” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
—-