॥ যুগনায়ক স্বামী বিবেকানন্দ ॥
কলমে – নম্রতা বিশ্বাস, এম.এ, বি.এড, পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়
১. ভূমিকা:-
উনবিংশ শতাব্দীতে ভারতবর্ষে আবির্ভূত মহামানবদের মধ্যে অন্যতম হলেন স্বামী বিবেকানন্দ। তাঁর সৎ চিন্তা, মহৎ জ্ঞান, মানব জাতিকে তাঁর মেরুদণ্ড সোজা রাখতে শিখিয়েছে। স্বামীজি ছিলেন জাতির গৌরব, মানব সেবার জীবন্ত প্রতীক ও যৌবনের মূর্ত প্রতিচ্ছবি।
স্বামী বিবেকানন্দের আবির্ভাব ঘটে সেই সময় যখন ভারতবর্ষ ইংরেজদের হাতে পরাধীন ছিল, কুসংস্কারে ভরে উঠেছিল গোটা দেশ, দারিদ্রতায় জর্জর ছিল সমাজব্যবস্থা। ভারতে হিন্দু পুণর্জাগরণের স্বামী বিবেকানন্দ ছিলেন অন্যতম পুরোধা। ভারত মা এমন একজন মহামানবের জন্ম দিয়েছিলেন যিনি শুধু ভারতবর্ষ নয়, সমস্ত বিশ্বের গৌরব।
২. জন্ম ও বংশপরিচয় :-
১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ১২ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তি উৎসবের দিন উত্তর কলকাতার সিমলা অঞ্চলে ৩ নম্বর গৌরমোহন মুখোপাধ্যায় স্ট্রিটে এক কায়স্থ দত্ত পরিবারে স্বামী বিবেকানন্দ জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। স্বামীজির প্রকৃত নাম ছিল নরেন্দ্র নাথ দত্ত ছোটোবেলায় সবাই তাঁকে ‘বিলে’ বলে ডাকতো। শৈশব থেকেই তিনি খুব চঞ্চল, মেধাবী ও সাহসী ছিলেন।
তাঁর পিতার নাম বিশ্বনাথ দত্ত, তিনি কলকাতা উচ্চ আদালতের একজন আইনজীবী ছিলেন, মা ছিলেন ভুবনেশ্বরী দেবী। স্বামী বিবেকানন্দের নয়জন ভাই-বোন ছিল। মহেন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন স্বামীজির মধ্যম ভাই, তিনি বিদেশ ভ্রমণে স্বামীজির সঙ্গী ছিলেন এবং বিশিষ্ট লেখকও ছিলেন। অন্যদিকে কনিষ্ঠভাই ছিলেন ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত, তিনি ছিলেন বিশিষ্ট সাম্যবাদী নেতা ও গ্রন্থকার।
স্বামীজির পিতা বিশ্বনাথ দত্ত ছিলেন ধর্ম বিষয়ে উদার। আর মা ভুবনেশ্বরী দেবীও ছিলেন ভক্তিমতী নারী। বিবেকানন্দের চিন্তা ও ব্যক্তিত্ব বিকাশে তাঁর পিতার প্রগতিশীল ও যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ও মায়ের ধর্মপ্রাণতা ছিল বিশেষ সহায়ক।
৩. শিক্ষা-কর্ম জীবন :-
স্বামীজি তাঁর মায়ের কাছেই প্রথম বর্ণমালা শিখেছিলেন। বাড়ির শিক্ষা শেষ করে ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দে তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন। তখন অবশ্য তিনি নরেন্দ্র নাথ দত্ত হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। চঞ্চল স্বভাবের হলেও পড়াশোনার প্রতি বরাবরই তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল এই কারণে বিদ্যালয়ে সবার মধ্যে ছিলেন সেরা ছাত্র। ১৮৭৯ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিক পাস করে বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন, পরবর্তীতে নরেন্দ্রনাথ জেনারেল অ্যাসেম্বলি’জ ইনস্টিটিউশনে (অধুনা স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা) পাশ্চাত্য যুক্তিবিদ্যা, পাশ্চাত্য দর্শন ও ইউরোপীয় ইতিহাস নিয়ে অধ্যায়ন করেছিলেন। নরেন্দ্রনাথ ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে চারুকলা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, আর ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে স্নাতকের পড়া শেষ করে ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন।
তৎকালীন সময়ে সমাজের অবস্থা ছিল শোচনীয় ফলে স্বামীজি সমাজের অবক্ষয়গুলো দূর করার জন্য ধর্মীয় কুসংস্কার-রীতি নীতি, দারিদ্র পীড়িত মানুষদের উন্নতি, শিক্ষাব্যবস্থায় অগ্রগতি আনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ অবলম্বন করেছিলেন। এইসবের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলো ‘রামকৃষ্ণ মিশন’, এটি সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত, চিকিৎসা ও দাতব্য কাজের জন্যই মূলত নির্মাণ করা হয়েছে।
স্বামীজি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ভারতীয় বেদান্ত ও যোগ দর্শন প্রচারের জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। সাহিত্য কর্মেও তাঁর বিশেষ অবদান লক্ষ করা যায়। স্বামীজি বিভিন্ন কর্মে পারদর্শী ছিলেন এবং সেইসব তিনি মানব সেবাতেই কাজে লাগিয়েছিলেন।
৪. সনাতন ধর্ম ও বিবেকানন্দ :-
স্বামীজি ছোটোবেলা থেকেই আধ্যাত্মিকতার প্রতি আগ্রহী ছিলেন। এইসময় মহাদেব, রামচন্দ্র, সীতা ও মহাবীর হনুমানের মূর্তির সামনে প্রায়ই তিনি ধ্যানে বসতেন। একটিসময় স্বামীজি ব্রহ্মসমাজের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে ধীরে ধীরে মূর্তিপূজার সমালোচনা করতে থাকেন ও বিশ্বাস করতে থাকেন ঈশ্বর নিরাকার। তখন থেকেই তাঁর সন্ন্যাস জীবনের প্রতি ঝোঁক বেড়ে যায়। পরবর্তীতে যখন ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দে রামকৃষ্ণ দেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটে তখন তাঁর প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে স্বামীজি রামকৃষ্ণ দেবকে নিজের গুরু মনে করেন এবং তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।
স্বামীজি উপলব্ধি করেছিলেন যে মানুষের মধ্যে ভগবান বাস করেন, এইকারনে, তিনি বলেছিলেন ‘জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’। বিভিন্ন স্থানে স্বামীজি ধর্ম সম্পর্কে ব্যক্তিগত অভিমত প্রকাশ করেছিলেন এবং তৎকালীন সময়ে হিন্দু ধর্মের যে কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্ধবিশ্বাস ছিল তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। স্বামীজি সনাতন ধর্মকে উজ্জীবিত করার মাধ্যমে ভারতবর্ষকে পুণরুজ্জীবিত করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন।
হিন্দু ধর্মে স্বামী বিবেকানন্দের সবথেকে বড়ো অবদান হলো ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে শিকাগোতে বিশ্ব-ধর্ম-সম্মেলনে হিন্দু ধর্মের মাহাত্ম সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে অবহিত করা। এখানে গোটা বিশ্বের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। স্বামী বিবেকানন্দের বন্ধু ও ভক্তরা চেয়েছিলেন তিনি যেন এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন, তিনি এই সম্মেলনে যোগদান করা নিয়ে প্রথমে দ্বিধান্বিত থাকলেও পরবর্তীতে ভারতীয় উপদ্বীপের দক্ষিণ প্রান্তে কন্যাকুমারীর একটি শিলাদ্বীপে ধ্যান করার মাধ্যমে নিজের মনকে দৃঢ় করেন এবং বিশ্ব-ধর্ম-সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে উপস্থিত সকলকে তিনি নিজের ভ্রাতা ও ভগিনী বলে সম্বোধন করেন এবং হিন্দু ধর্মের বিস্তারিত ব্যাখ্যা প্রদান করেন। স্বামীজি এইকথাও বলেন যে- “খালি পেটে ধর্ম হয় না”। স্বামী বিবেকানন্দের জন্যই আজ হিন্দু ধর্ম বিশ্বদরবারে এক নতুন রূপ পেয়েছে।
৫. সমাজ সংস্কারক বিবেকানন্দ:-
উনবিংশ শতাব্দীতে ভারতীয় সমাজ জাতিভেদপ্রথা, কুসংস্কারের বেড়াজালে আবদ্ধ ছিল, এবং সমাজ সংস্কারকদের প্রচেষ্টায় সেই বেড়াজাল কিছুটা হলেও ভেদ করা সম্ভব হয়েছে, স্বামীজির তেমনি একজন সমাজ সংস্কারক ছিলেন। স্বামী বিবেকানন্দ সকলকে অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার দূর করে যুক্তিবাদী হতে বলতেন। সমাজে অবস্থিত সকল শ্রেনীর মানুষদের একসূত্রে আবদ্ধ করার জন্য তিনি বদ্ধপরিকর ছিলেন। দরিদ্র ভারতবাসীদের দুঃখ মোচনের জন্য স্বামীজি সাবলম্বী হতে বলেছিলেন। তাই সকল দেশবাসীর প্রতি আহ্বান করে বলেন – “ সদর্পে বল আমি ভারতবাসী, ভারতবাসী আমার ভাই, বল মূখ ভারতবাসী, দরিদ্র ভারতবাসী, ব্রাহ্মণ ভারতবাসী, চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই।” স্বামীজি আজীবন “শিব জ্ঞানে জীব সেবা”-এর কথা বলতেন। স্বামী বিবেকানন্দের নির্মিত ‘রামকৃষ্ণ মিশন’-এর মূল উদ্দেশ্যই ছিল এই সমাজসেবা মূলক কাজ করা ।
নারী শিক্ষা প্রসারেও তাঁর অনেক বড়ো অবদান লক্ষ করা যায়। নারী শিক্ষার জন্য গ্রামে গ্রামে পাঠশালা গড়ে তুলেছিলেন। স্বামীজি নারী ও পুরুষকে সমান চোখে দেখতেন।
স্বামী বিবেকানন্দ বহু বছর হিন্দু ধর্মের প্রচারের জন্য বিদেশে থাকার ফলে বিদেশের বহু মানুষ তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। এরা বিদেশ থেকে ভারতে এসে পরাধীন ভারতকে নতুন রূপে গড়তে অনেক সাহায্য করেছিলেন। স্বামীজির দেখানো পথ অবলম্বন করে নির্দ্বিধায় এরা সমাজসেবা মূলক কাজ করে গিয়েছেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ভগিনী নিবেদিতা যার প্রকৃত নাম মার্গারেট নোবেল। ভগিনী নিবেদিতা কলকাতায় অবস্থিত মেয়েদের শিক্ষিত করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন, সমাজের হিতের জন্য বিভিন্ন সমাজ সংস্কার মূলক কর্মও করেছিলেন। এছাড়া ছিলেন সোভিয়েত দম্পতি, জোসেফাইন ম্যাকলিওড, সারা ওলি বুল এবং প্রমুখ ব্যক্তি যারা সমাজ সংস্কারের জন্য বিভিন্ন ধরনের কার্য করেছিলেন।
৬. সাহিত্যিক বিবেকানন্দ :-
স্বামী বিবেকানন্দ সমাজসেবকের পাশাপাশি একজন সাহিত্যিকও ছিলেন। তাঁর রচনাসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য’(১৯০২), ‘পরিব্রাজক’ (১৯০৫), ‘বর্তমান ভারত’(১৯০৫), ‘ভাববার কথা’ (১৯০৭) এবং ‘পত্রাবলী’ । ইংরেজি, বাংলা, সংস্কৃতে স্বামীজির কয়েকটি কবিতাও আছে, এরমধ্যে ‘Kali The Mother’ কবিতাটি ভাব ও ভাষাগত গুণের জন্য খ্যাত । এই কবিতার বাংলা অনুবাদ করেছিলেন সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত যার নাম দেন ‘নাচুক তাহাতে শ্যামা’। স্বামী বিবেকানন্দ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বাংলা মুখপত্র ‘উদ্বোধন’ (১৮৯৯) পত্রিকায়ও লিখেছিলেন, এখানে রয়েছে নয়টি বাংলা রচনার নিদর্শন।
স্বামী বিবেকানন্দের রচিত প্রথম চারটি প্রবন্ধ উদ্বোধন পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। প্রথম গ্রন্থ ‘প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য’ গ্রন্থে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য সভ্যতার তুলনামূলক আলোচনা আছে, ‘পরিব্রাজক’ মূলত ভ্রমণ কাহিনী, ব্যক্তিগত চিন্তা ও মননের দ্বারা সমৃদ্ধ, ‘ভাববার কথা’ গ্রন্থটি ধর্মীয় প্রসঙ্গ কৌতুকরস দ্বারা ব্যাখ্যা করা আর ‘পত্রাবলী’তে আছে শিষ্যকে তাঁর অন্তরঙ্গ মনের পরিচয় দিয়ে লিখিত বস্তু।
তৎকালীন সময়ে চলিত ভাষায় সেইভাবে গ্রন্থ রচনা হতো না, স্বামীজি সর্বপ্রথম লেখার মধ্য দিয়ে চলিত ভাষায় আনে গতিবেগ। কোলকাতার মার্জিত কথ্যবুলির উপরই স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর রচনা আরম্ভ করেন। স্বামীজির চলিত ভাষার প্রতি প্রবৃত্তি জন্মানোর মূলে ছিল জনগণের সঙ্গে একাত্মভাব । কমলকান্ত রূপের পরিবর্তে বাংলা সাহিত্যে স্বামী বিবেকানন্দ যে বলিষ্ঠতা এনেছিলেন তাতে বাংলা সাহিত্য চিরকাল স্বামীজির কাছে ঋণী থাকবে।
৭. যুবসমাজের আদর্শ স্বামী বিবেকানন্দ:-
স্বামী বিবেকানন্দ হলেন যুব সমাজের প্রেরণা। তাঁর অগ্নিময় বাণীর অধিকাংশই ছিল যুবসমাজকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্য। প্রাক-স্বাধীনতা যুগে যুবসমাজকে মাতৃভূমির শৃঙ্খল-মোচনের জন্য স্বামীজির বাণী অনেকাংশে হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছিল। স্বামীজির মতে যুবসমাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে শিক্ষা সেটি হলো জীব সেবা, জীব সেবার মধ্য দিয়েই ঈশ্বর সেবা হয়ে থাকে।
ব্যবহারিক শিক্ষার পাশাপাশি আধ্যাত্মিক শিক্ষার প্রয়োজন যুবসমাজের জন্য সেটি স্বামীজি মনে করতেন তার সঙ্গে শরীরচর্চা ও খেলাধুলা উপরও তিনি জোর দিতে বলেছিলেন। ব্যবহারিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষা মানুষকে সার্বিক বিকাশে সাহায্য করে এই শিক্ষাকে মানুষ ইতিবাচক শিক্ষা বলে মনে করতেন। অন্যদিকে খেলাধুলা ও শরীরচর্চার ফলে শরীর হয়ে উঠবে সুস্থ, আর শরীর সুস্থ থাকলে মনও থাকে সুস্থ।
১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দ যুবসমাজের কথা ভেবেই ‘অদ্বৈত আশ্রম’ ও বেলুড়ে ‘রামকৃষ্ণ মিশন’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হাওড়া জেলায় অবস্থিত বেলুড় অঞ্চলে হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত ‘বেলুড় মঠ’ অবস্থিত। বেলুড় মঠ হল রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রধান কার্যালয়। এই মঠের প্রধান উদ্দেশ্যই হল রামকৃষ্ণ মিশনে যোগদানকারী যুবকাদের বিভিন্ন সেবা মূলক কাজে প্রশিক্ষিত করে তোলা ।
স্বামী বিবেকানন্দ হলেন যুব সমাজের দর্পণ, এইকারনে তাঁর আবির্ভাব দিবস অর্থাৎ ১২ জানুয়ারি ‘জাতীয় যুব দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে প্রতিবছর। ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে এই দিনটি পালন করার কথা ঘোষণা করেছিলেন ভারত সরকার। স্বামীজিকে স্বরণ করে ১২ জানুয়ারি থেকে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিবছর যুব উৎসবও পালিত হয়, যেখানে প্রচুর তরুণ তরুণীরা অংশগ্রহণ করে থাকে এবং নিজেদের চিন্তাধারা, মত প্রকাশ করে থাকে।
আজও স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের যুবক যুবতীরা সমাজ কল্যাণ হেতু কাজ করে যাচ্ছে এবং আগামীতেও করে যাবে ।
৮. উপসংহার:-
স্বামী বিবেকানন্দ ভারতবাসীদের জন্য হলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, কিন্তু এই নক্ষত্র আমাদের মাঝে ছিলেন খুব কম সময়ের জন্য। ১৯০২ খ্রিস্টাব্দে ৪ জুলাই মাত্র ৩৯ বছর বয়সে সমস্ত বিশ্বকে পিতৃহারা করে পরলোকগমন করেছিলেন। তিনি জীবিত থাকাকালীনই বলেছিলেন “আমি ৪০ দেখবো না”- আর তিনি এই কথা রেখেছিলেন। তিনি সত্যি ধর্মবীর ও কর্মবীর ছিলেন। তাঁর বাণী আজও মানবজাতির অন্তরে উৎসাহ প্রদান করে। এছাড়া ভারতবর্ষের নবজাগরণের ক্ষেত্রে স্বামীজি বিরাট ভাবে প্রভাবিত করেছিলেন। স্বামীজি দেশের সেবায় যেভাবে নিজেকে সমর্পিত করেছিলেন তাতে তিনি চিরকাল আমাদের মনে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।