কালিকলম পত্রিকা
কল্লোল পত্রিকার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক ছিল মূরলীধর বসুর। কল্লোলের জন্য লেখা সংগ্রহে তার তৎপরতার অভাব ছিল না। কিন্তু তাঁর নিজস্ব পত্রিকা ‘সংহতি’ বন্ধ হয়ে গেলে একটা নতুন পত্রিকা প্রকাশের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলেন, আত্মপ্রকাশ ঘটল কালিকলম পত্রিকার।
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তরর কথায় –
“কল্লোল ও কালিকলম যেন একই মুক্ত বিহঙ্গের দুটি দীপ্ত পাখা।”
◆ পত্রিকা প্রকাশ ◆
● কালিকলম একটি সচিত্র মাসিক সাহিত্য পত্রিকা।
● পত্রিকাটির প্রথম প্রকাশ বৈশাখ, ১৩৩৩ বঙ্গাব্দ।
● পত্রিকাটি মুরলীধর বসু, শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায় ও প্রেমেন্দ্র মিত্রের সম্পাদনায় প্রকাশিত হত।
এদের সঙ্গী ছিলেন বরদা এজেন্সীর কর্ণাধর শিশির কুমার নিয়োগী। সাহিত্যপ্রাণ শিশির কুমার পত্রিকার জন্য অর্থ যোগাতেন।
● কালিকলম পত্রিকা প্রকাশিত হত কলেজস্ট্রিটের মার্কেটের বরদা এজেন্সি থেকে।
● কালিকলম পত্রিকার প্রতি সংখ্যার দাম ৪ আনা। বার্ষিক ডাক মাশুল – সাড়ে ৩ টাকা।
● পত্রিকাটি প্রতি মাসের ৩০ তারিখ প্রকাশিত হত।
◆ প্রকাশ্য বিষয় ◆
● কালিকলমকে সচিত্র মাসিক পত্র হিসাবে আখ্যাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। পত্রিকার শুরুতে তৃতীয় বর্ষের দ্বাদশ সংখ্যা পর্যন্ত প্রায় নিয়মিত পাতা জোড়া ছবি ছাপা হয়েছে। সেখানে কখনো আলোক চিত্র বা হাতে আঁকা ছবি প্রকাশ পেয়েছে।
● চয়নিকা নামে একটি বিভাগ ছিল যেখানে অন্যান্য পত্র পত্রিকার পৃষ্ঠা থেকে প্রথিতযশা লেখকদের লেখা সংকলিত হত।
● আবার অনেক গানের সঙ্গে গানের স্বরলিপিও প্রকাশ পেত কালিকলমের পাতায়।
● এছাড়া প্রথিতযশা সাহিত্যিকদের ছোটগল্প, কবিতা, উপন্যাস প্রকাশিত হত কালিকলমের পাতায়।
● প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জীবনানন্দ দাশের ১৭টি কবিতা প্রকাশিত হয়েছিল কালিকলমের পাতায়।
◆ কালিকলম পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব থেকে প্রথমে প্রেমেন্দ্র মিত্র পরে শৈলজানন্দ সরে যান।
১৩৩৩ বঙ্গাব্দে পত্নী নীলিমা বসুর অকাল প্রয়াণে মুরলীধর নিঃসঙ্গ হয়ে যান, প্রবল অর্থ সংকটে পড়েন।
অবশেষে, ক্ষীণতনু কালিকলম পত্রিকা চতুর্থ বর্ষে অর্থাৎ ১৩৩৬ এ চারটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়ে বন্ধ হয়ে যায়।
জগদীশ গুপ্ত লিখেছিলেন,
“কালিকলমের অকালমৃত্যুর মাঝে আমার নিজেরও সমাধি হইয়াছে এইরূপ অনুভব করিতেছি।”
দারুন
দারুন