ভিডিও দেখুন
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা
◆ পটভূমি ◆
রামমোহন রায়ের মৃত্যুর পর ব্রহ্মসমাজ ক্রমশ দূর্বল হয়ে পড়লে দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর একে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ১৮৩৯ খ্রি ৬ই অক্টোবর প্রতিষ্ঠা করেন – তত্ত্বরঞ্জিনী সভা।
এই সভার দ্বিতীয় অধিবেশনে রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ সভার নতুন নামকরণ করেন তত্ত্ববোধিনী সভা।
এই সভার মুখপত্র হিসাবে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার প্রকাশ হয়।
◆ প্রথম প্রকাশ ◆
১৬ই আগষ্ট, ১৮৪৩ খ্রিস্টাব্দে (১লা ভাদ্র, ১২৭০ বঙ্গাব্দ) তত্ত্ববোধিনী সভার মুখপত্র স্বরূপ ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’ প্রকাশিত হয়।
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার কন্ঠে “একমেবাদ্বিতীয়ং” বাক্যটি মুদ্রিত থাকত।
◆ প্রথম সংখ্যা ◆
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার প্রথম সংখ্যায় সূচী –
১) পত্রিকা প্রকাশের তাৎপর্য্য
২) মহোপাধ্যায় শ্রীযুক্ত রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ ভট্টাচার্য্য মহাশয় কর্ত্তৃক বর্ত্তমান শকের (১৭৬৫) গত ৪ বৈশাখে ব্রহ্মসমাজে ব্যাখ্যাত হয়।
৩) মহোপাধ্যায় শ্রীযুক্ত রামচন্দ্র বিদ্যাবাগীশ ভট্টাচার্য্য মহাশয় কর্ত্তৃক বর্ত্তমান শকের গত ১ জ্যৈষ্ঠে ব্রহ্মসমাজে ব্যাখ্যাত হয়।
৪) তত্ত্ববোধিনী পাঠশালা
৫) মহাত্মা শ্রীযুক্ত রাজা রামমোহন রায় কর্ত্তৃক বাজসনেয়সংহিতোপনিষদের ভাষা বিবরণের ভূমিকার চূর্ণক।
◆ প্রচ্ছদ ◆
● প্রথম প্রকাশের সময় থেকে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার কোনো মলাট বা প্রচ্ছদ ছিল না। প্রথম পৃষ্ঠা থেকেই লেখা ছাপা হত।
● ১৮৮৪ খ্রি থেকে কালচে সবুজ রঙের প্রচ্ছদ পত্র সংযোজিত হয়।
● প্রচ্ছদের মতো অনুপস্থিত থাকত সম্পাদকের নামও। তরুণ রবীন্দ্রনাথ এই রীতির পরিবর্তন করেন।
● পরবর্তীকালে প্রতিটি সংখ্যায় প্রচ্ছদ, প্রচ্ছদে পত্রিকার নাম, সম্পাদকের নাম ছাপা হতে থাকে। সূচিপত্রও মুদ্রিত হত।
◆ পত্রিকা পরিচালনা ◆
● অক্ষয়কুমার দত্ত তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব পালন করেন ১২ বছর, যথাক্রমে ৩০, ৪৫ ও ৬০ টাকার বেতনে।
● অক্ষয়কুমার দত্তের পর নবীনচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর, অযোধ্যানাথ পাকড়াশী, সীতানাথ ঘোষ, হেমচন্দ্র বিদ্যারত্ন, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ক্ষিতীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ বিভিন্ন সময়ে পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব সামলেছেন।
● তবে, পত্রিকার সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকতেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
● রামমোহন রায়ের পুত্র রমাপ্রসাদ রায় কমিটিকে একটি মুদ্রণ যন্ত্র দান করেছিলেন।
◆ প্রকাশ্য বিষয় ◆
ধর্মপ্রচারের উদ্দেশ্যে রচিত হলেও বাংলা গদ্যের সুসংগঠনে তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার অবদান অনস্বীকার্য।
● অক্ষয়বাবুর চেষ্টায় পত্রিকায় ধর্ম ছাড়াও সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ও প্রকাশিত হত।
● পত্রিকায় প্রকাশিত বিষয়গুলির মান ঠিক রাখার জন্য এশিয়াটিক সোসাইটির অনুসরণে দেবেন্দ্রনাথ পাঁচ জনের একটি প্রবন্ধ নির্বাচনী সভা সংস্থাপন করেছিলেন, যাঁরা প্রকাশ্য বিষয় মনোনীত করতেন।
● বিদ্যাসাগর, রাজনারায়ণ বসু, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রমুখ পত্রিকার পাতাকে সমৃদ্ধ করেছেন।
● এছাড়া পত্রিকায় ধর্মতত্ত্ব , তার ব্যাখ্যা ও বেদ বেদান্তের অনুবাদের ভার নিয়েছিলেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
● জ্ঞান বিজ্ঞান বিষয়ক তত্ত্বকথা প্রচারে দায়িত্ব নিয়েছিলেন অক্ষয়কুমার দত্ত।
◆ পত্রিকার গ্রাহক সংখ্যা একসময় ৭০০ পর্যন্ত পৌঁছেছিল।
◆ পত্রিকাটি ১৯৩২ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছিল। ক্ষিতিন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুতে পত্রিকাটি বন্ধ হয়ে যায়।
Good
বাংলা সংবাদপত্র এর ইতিহাসে সংবাদ প্রভাকর পত্রিকার অবদান ।