অলঙ্কার পরিচয়
অলঙ্কার প্রথম প্রবক্তা
লাটানুপ্রাস ভামহ
শ্রুত্যনুপ্রাস দন্ডী
যমক ভরত
শ্লেষ বামন
বক্রোক্তি ভামহ
পুনরুক্ত বদাভাস উদ্ভট
কাকু বক্রোক্তি রুদ্রট
★ শব্দ অলঙ্কার ★
১) বৃত্ত্যনুপ্রাস – ব্যঞ্জনগুচ্ছ অযুক্তভাবে
ধ্বনিত হয় স্বরূপ অনুসারে অথবা ক্রমানুসারে
(উদা:- জীবন নব রাগে রঞ্জিত হোক)
২) ছেকানুপ্রাস – ব্যঞ্জনগুচ্ছ যুক্ত বা অযুক্ত
ভাবে ধ্বনিত হয় ক্রমানুসারে
(উদা:- নীল অঞ্জন ঘন পুঞ্জ ছায়ায়)
৩) শ্রুত্যানুপ্রাস – উচ্চারিত ব্যঞ্জনধ্বনির
সাদৃশ্যময় সমাবেশ
(উদা:- বাতাস বহে বেগে, ঝিলিক মারে মেঘে)
৪) লাটানুপ্রাস – অর্থের পরিবর্তন না ঘটিয়ে
একই শব্দের পুনরাবৃত্তি
(উদা:- সকাল সকাল বাড়ি ফিরে এসো)
৫) শ্লেষ – একই শব্দের ভিন্ন ভিন্ন অর্থে গ্রহণ
(উদা:- “মধুহীন করো না গো তব মন: কোকনদে”)
৬) যমক – একই শব্দের পুনরাবৃত্তি ভিন্ন ভিন্ন
অর্থে
(উদা:- “ভারত ভারতখ্যাত আপনার গুণে”)
৭) বক্রোক্তি – অভিপ্রেত অর্থের পরিবর্তে
ভিন্ন অর্থ গ্রহণ
(উদা:- “কে ছেঁড়ে পদ্মের পর্ণ ?”)
৮) পুনরুক্ত – একাধিক শব্দ একই
বদাভাস অর্থে প্রযুক্ত
(উদা :- “এক রত্তি ছোটো ছেলে” )
★ অর্থালঙ্কার ★
◆ সাদৃশ্যমূলক অলঙ্কার –
১) উৎপ্রেক্ষা – উপমেয়কে উপমান বলে
সংশয়
(উদা:- “সাধ্বী জননীর দৃষ্টি/সমদ্যুত বাজ”
উপমেয় – সাধ্বী জননীর দৃষ্টি
উপমান – সমদ্যুত বাজ )
২) ভ্রান্তিমান – উপমেয় ও উপমানের মধ্যে
ভ্রম
৩) ব্যতিরেক – উপমেয় উপমান অপেক্ষা
উৎকৃষ্ট/নিকৃষ্ট
( উদা : – “কন্ঠস্বরে বজ্র লজ্জাহত”
উপমেয় – কন্ঠস্বর, উপমান – বজ্র )
৪) সমাসোক্তি – উপমেয়র উপর উপমানের
ব্যবহার আরোপ
অচেতন বস্তুর ওপর সচেতন বস্তুর ধর্ম
( উদা : – “আসন্ন শীতের বেলা হামাগুড়ি দিয়ে
চলে আসে”
(শীত – অচেতন পদার্থ, হামাগুড়ি – শিশুর ধর্ম)
৫) নিশ্চয় – উপমানকে নিষিদ্ধ করে
উপমেয়কে প্রতিষ্ঠিত করে
( উদা:- “অসীম নীরদ নয়, ওই গিরি হিমালয়”
উপমেয় – হিমালয়, উপমান – নীরদ )
৬) অপহ্নতি – উপমেয়কে অস্বীকার করে
উপমানকে প্রতিষ্ঠা করা
( উদা:- “দেশের যত নদীর ধারা, জল না
অশ্রুধারা”
উপমেয় – নদীর ধারা, উপমান – অশ্রুধারা )
৭) সন্দেহ – উপমেয় ও উপমান উভয়ক্ষেত্রে
সমান সংশয়
( উদা:- “সোনার হাতে সোনার চুড়ি, কে কার
অলঙ্কার ?”
উপমেয় – সোনার হাত,উপমান – সোনার চুড়ি)
৮) অতিশয়োক্তি – উপমেয়কে সম্পূর্ণ গ্রাস
করে উপমান উপমেয়রূপে প্রকাশ
( উদা:- “আইলা গোধূলি, একটি রতন ভালে”
উপমেয় – নক্ষত্র অনুল্লেখিত, উপমান – রতন)
◆ বিরোধাভাস অলঙ্কার –
১) বিরোধাভাস – দুটি বস্তু আপাতভাবে
পরস্পর বিরোধী প্রকৃতপক্ষে বিরোধ নেই
(উদা :- “বড়ো যদি হতে চাও ছোট হও তবে”)
২) বিভাবনা – কারণ ছাড়া কার্যের উৎপত্তি
(উদা:- “বিনা অলঙ্কারে শোভে প্রিয়ার শরীর”)
৩) বিষম – কারণ ও কার্য্যে বৈষম্য
(উদা:- “অন্ধকারের উৎস হতে উৎসারিত আলো/ সেই তো তোমার ভালো।”)
◆ গূ্ঢ়ার্থ প্রতীতিমূলক অলঙ্কার –
১) ব্যাজস্তুতি – নিন্দার ছলে প্রশংসা অথবা
প্রশংসা ছলে নিন্দা
(উদা:- “কি সুন্দর মালা আজি পড়িয়াছ গলে
হে প্রচেত:”)
২) স্বভাবোক্তি – বস্তু বা বিষয়ের রূপ, গণনা
কিংবা স্বভাবের যথাযথ ও
সৌন্দর্যময় বর্ণনা