ঢোঁড়াই চরিত মানস


✒️ লেখক : সতীনাথ ভাদুড়ী

✒️ লেখক পরিচিতি :

✒️ প্রথম প্রকাশ :
পত্রিকায় – প্রথম চরণ(খন্ড) ‘দেশ’ পত্রিকায় ১৫ই জ‍্যৈষ্ঠ, ১৩৫৫ সাল থেকে ২৬শে ভাদ্র পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
প্রথম প্রকাশে নাম ছিল – “সটীক ঢোঁড়াই চরিত মানস”।
দ্বিতীয় চরণ(খন্ড) ‘দেশ’ পত্রিকায় ১৩৫৭, ১৩ই জ‍্যৈষ্ঠ থেকে ৩০শে ভাদ্র পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়।
★ তৃতীয় খন্ডের নাম ঠিক করেছিলেন “উত্তর ঢোঁড়াই চরিত”, কিন্তু তা আর লেখা হয়নি।
গ্রন্থাকারে প্রকাশ
১ম খন্ড – ১৯৪৯ সালের এপ্রিল মাস
২য় খন্ড – ১৯৫১ সালের মে মাস

✒️ উৎসর্গ : নেই

✒️ পরিচ্ছেদ সংখ‍্যা : ৭ টি কান্ড, প্রথম চরণ/খন্ডে – ৪টি দ্বিতীয় চরণ/খন্ডে – ৩টি।
◆ প্রথম খন্ডে –
    কান্ডের নাম               পরিচ্ছেদ সংখ‍্যা
     ১) আদিকান্ড                       ৫
    ২) বাল‍্যকান্ড                       ১১
    ৩) পঞ্চায়েত কান্ড                ১১
    ৪) রামিয়া কান্ড                   ২২

◆ দ্বিতীয় খন্ডে –
    ৫) সাগিয়া কান্ড                  ২০
    ৬) লঙ্কাকান্ড                       ১৯
    ৭) হতাশাকান্ড                      ৬
◆ প্রথম পর্বে পরিচ্ছেদ সংখ‍্যা – ৪৯
◆ দ্বিতীয় পর্বে পরিচ্ছেদ সংখ‍্যা – ৪৫
মোট পরিচ্ছেদ সংখ‍্যা – ৯০

✒️ প্রকার : সমাজ-রাজনীতি মূলক উপন‍্যাস

✒️ বিষয়বস্তু : দুই খন্ডে রচিত ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ উপন‍্যাসের প্রথম পর্বে তাৎমাটুলি ও ধাঙরটুলির মানুষের সামাজিক জীবন এবং দ্বিতীয় পর্বে কোয়েরিটোলার মানুষ এবং তৎকালীন রাজনৈতিক প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। এবং সমস্তটাই ঢোঁড়াই চরিত্রটিকে কেন্দ্র করে।
বাবার মৃত‍্যু, মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের ফলে ঢোঁড়াইকে বড় হতে হয় বৌকা বাওয়া নামে এক সন্ন‍্যাসীর কাছে। তাৎমাটুলির অলস জীবনযাত্রা কিংবা সাধূর মতো ভিক্ষে করার পরিবর্তে বেছে নেয় শ্রমিক জীবন। অনেককালের বিবাদ মিটিয়ে ধাঙরটুলি ও তাৎমাটুলির মানুষেরা কাছাকাছি আসে ঢোঁড়াইয়ের হাত ধরে, ঢোঁড়াই রামিয়ার বিয়েতে। এরপর রামিয়ার সঙ্গে ঝগড়া এবং আশেপাশের মানুষের উস্কানিতে ঢোঁড়াই রামিয়াকে ছেড়ে, তাৎমাটুলি ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে। পৌঁছে যায় বিসকান্ধায় এবং ধীরে ধীরে বৃহত্তর রাজনৈতিক জীবনে।
       ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ উপন‍্যাসের নামটি তুলসীদাসের রামচরিত মানসকে মনে করায়। ঔপন‍্যাসিক সতীনাথ ভাদুড়ী ‘ঢোঁড়াই চরিত মানস’ উপন‍্যাসে একদিকে যেমন রামচন্দ্রের মহিমা তুলে ধরেছেন তেমনি সচেতনভাবে উপন‍্যাসে পরিচ্ছেদের পরিবর্তে সাতটি কান্ডে বিভক্ত করেছেন।
ঔপন‍্যাসিক সতীনাথ ভাদুড়ীর মতে ‘ঢোঁড়াইচরিত মানস’ শ্রেষ্ঠ উপন‍্যাস এবং সর্ববৃহৎউপন‍্যাস ও।

✒️ অন‍্যান‍্য :
চরিত্র পরিচয় :-
১) প্রধান চরিত্র – ঢোঁড়াই
২) বুধনী – ঢোঁড়াইয়ের মা
৩) বাবুলাল – বুধনীর ২য় স্বামী
৪) দুখিয়া – বুধনী ও বাবুলালের ছেলে
৫) বৌকা বাওয়া – ঢোঁড়াইকে মানুষ করেছে
৬) রামপিয়ারী/রামিয়া – ঢোঁড়াইয়ের স্ত্রী
৭) নুনকু মাহাতো – তাৎমাটুলির পূর্ব প্রধান
৮) ধনুয়া মাহাতো – তাৎমাটুলির পরবর্তী
                                 প্রধান
৯) গুদর – ধনুয়ার ছেলে
১০) ফুলঝরিয়া – ধনুয়ার মেয়ে
১১) মুঙ্গীলাল – ধনুয়ার শালা
১২) পুকন মন্ডল – তাৎমাদের জমি দিয়েছে
১৩) বাসুয়া – পঞ্চায়েত নায়েব
১৪) নাল্লু – পঞ্চায়েত নায়েব
১৫) তেতর – পঞ্চায়েত নায়েব
১৬) এতোয়ারী – ধাঙড়দের মোড়ল
১৭) শুক্রা ধাঙড় – সাহেবের বাগানে মালী
১৮) শনিচরা – পাক্কিতে কাজ করে
১৯) মিসির জী – বাওয়ার থানে রামায়ণ পড়ে
২০) বিজনবাবু – জিরানিয়ার উকিল
২১) সামুয়র – খ্রিস্টান ছেলে
২২) মনুয়র – সামুয়রের খুড়তুতো ভাই
২৩) গিধর মন্ডল – বিসকান্ধার মোড়ল
২৪) লচুয়া হাঁড়ি – বিসকান্ধার চৌকিদার
২৫) বচ্চন সিং – বিসকান্ধার জমিদার
২৬) আনোখীবাবু – বচ্চন সিংএর বড়ছেলে
২৭) লাডলীবাবু – আনোখীবাবুর ভাই
২৮) মোসম্মত – ঢোঁড়াইয়ের আশ্রয়দাতা
২৯) সাগিয়া – মোসম্মতের মেয়ে
৩০) রামনেওয়াজ মুন্সী – বিরানিয়ার মুহুরী
৩১) হরবংশ সিং – বচ্চন সিং এর সেপাই
৩২) ইনসান আলী – ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের গ্রাউন্ড
                                   কীপার
৩৩) নৌরঙ্গীলাল – আঙুলের ছাপে টাকা দেয়
৩৪) ভোপতলাল – নৌরঙ্গীলালের ছেলে
৩৫) এন্টনি – সামুয়রের ছেলে

আজাদস্তায় ভলিন্টিয়ার পঞ্চপান্ডবের নাম
১) গান্ধী – ভোপতলাল
২) জ‌ওয়াহর – বিশন শুকলা
৩) প‍্যাটেল – বলিন্টিয়ার জী
৪) আজাদ – বাচিতর সিং (বিচিত্র সিং)
৫) সর্দার – মিলিটারি ফেরত লোকটি
পরবর্তীকালে –
৬) রামায়ণজী – ঢোঁড়াই

বিশেষ অর্থ
১) কর্মধর্মার নাচ – ধাঙড়দের ভাদ্রপূর্ণিমার
                              পূজা ও উৎসব
২) যুগিরা – গ্রাম‍্যনৃত‍্য
৩) বাঙ্গাবাঙ্গী – ধাঙড়দের দেবতা
৪) পানিকাট্টি – জলসহার ন‍্যায় স্ত্রী আচার
৫) ভানুমতী – যাদুবিদ‍্যার দেবী

৬) মুরবলিয়া – কন্ধকাটা ভূত
৭) শাঁখরেল – একশ্রেণীর পেত্নী
৮) পানডুব্বী – জলে ডুবে মারা গেলে যে ভূত
৯) কিচিন – পেত্নীবিশেষ
১০) রক্কসভূত – আলেয়া

১১) সুথনী – কন্দবিশেষ
১২) লিটি – রুটি জাতীয় খাবার
১৩) আদৌড়ি – আদা দেওয়া একপ্রকার বড়ি
১৪) বাগনর – পাকা কাঁচকলা
১৫) মারুয়া – একপ্রকার শস‍্য

১৬) হরশিঙ্গার – শিউলি ফুল
১৭) কোদো – এক প্রকার আগাছা
১৮) পাত্থল – শিলা
১৯) আড়গড়িয়া – খোঁয়াড় রক্ষক
২০) লবড় লবড় – বাজে বকা
২১) পুঁতহুর – পুত্রবধূ
২২) চকুন্দর – বীটপালং
২৩) গোঁসাই – সূর্য
২৪) টোন – টাউন/শহর
২৫) বটোহী – পথিক