গোয়েন্দা সাহিত্যের ক্রমবিকাশ

কলমে : বন্দনা সাহা



          রহস্য রোমাঞ্চের প্রতি কম বেশি সব বয়সের মানুষেরই আকর্ষণ থাকে। মনের ভিতরে থাকা কৌতুহলী সত্তা রহস্য উন্মোচনের দ্বার উদঘাটনে উত্তেজনা বোধ করে। কিন্তু রহস্যের জটিলাবর্ত ভেদ করার ক্ষমতা সব সময় সাধারণ মানুষের থাকে না তাই দেবদূতের মতো আবির্ভূত হতে দেখা যায় গোয়েন্দা চরিত্রদের। বর্তমান সমাজে যেভাবে মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবনতা বেড়ে চলেছে সেক্ষেত্রে গোয়েন্দা বিভাগের হস্তক্ষেপ বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে। তবে  বাস্তবে তারা কতখানি সাফল্যের সঙ্গে অপরাধীকে সনাক্তকরণ করতে পারেন সে বিষয়ে যথেষ্ঠ সন্দেহ থেকে যায় কিন্তু সাহিত্যের পাতায় আজ পর্যন্ত যতজন গোয়েন্দা চরিত্রকে আমরা পেয়েছি তারা প্রত্যেকেই স্বকীয় সত্তায় সফল হয়েছেন । গোয়েন্দা বললেই আমাদের মাথায় এক সূক্ষ্ম, বুদ্ধি দীপ্ত, ক্ষুরধার স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন বিচক্ষণ ব্যক্তির প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে। যাকে বলা যায় সুপার হিরো, ম্যাজিক ম্যান কিংবা মুশকিল আসানের লম্প। তারা প্রখর চিন্তাশক্তি ও বিশ্লেষণী দক্ষতায় যে কোনো সমস্যার সমাধান করে দেন।  সাহিত্যের ধারায় রহস্য রোমাঞ্চে ভরপুর গোয়েন্দা কাহিনি পাঠককুলের কাছে বিপুল পরিমাণে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তাই কয়েক শতক ধরে পথচলা গোয়েন্দা সাহিত্যের পরিধি এক বিশাল আকার ধারণ করেছে ও সাহিত্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে।


         অধ্যাপক সুকুমার সেন তাঁর ‘ক্রাইম কাহিনীর কালক্রান্তি’ গ্রন্থে গোয়েন্দা সাহিত্যের উদ্ভব ও তার ক্রম বিকাশ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। সুকুমার সেন ক্রাইম কাহিনি বা গোয়েন্দা কাহিনি বোঝাতে ‘ডিটেকটিভ ফিকশন’ কথাটি ব্যবহার করেছেন। তিনি এই ধরণের কাহিনিকে কয়েকটি মানদণ্ডে ভাগও করেছেন। আনুমানিক উনবিংশ শতাব্দী প্রথমার্ধে আধুনিক গোয়েন্দা সাহিত্য রচনা শুরু হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ফ্রান্স ও ব্রিটেনে পুলিশি ব্যবস্থা শুরু হয় এবং তার পর থেকেই ডিটেকটিভ কাহিনি রচনায় জোয়ার আসে। ভারতবর্ষেও ওই সময়ে পুলিশি ব্যবস্থার প্রচলন হয়েছিল। কিন্তু পুলিশি ব্যবস্থা প্রচলনের বহু পূর্ব থেকেই বিভিন্ন ধরনের গোয়েন্দা কাহিনির খোঁজ পাওয়া যায়। অধ্যাপক সেন বলেছেন-
“আমাদের ভারত ভূমিতে ক্রাইম কাহিনী পাচ্ছি বৈদিক কাল থেকে…”
এক্ষেত্রে গোয়েন্দা কাহিনি এই অর্থে প্রযুক্ত হয়েছে যে সেখানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সূক্ষ্ম বুদ্ধি ও বিচক্ষণতার সাহায্যে অপরাধীকে শাস্তি দেওয়া হয়। সংস্কৃত সাহিত্যের বহু কাহিনিতে এই ধরণের আসন্ন বিপদের মুখে মোকাবিলা করার উপস্থিত বুদ্ধির বহু নিদর্শন পাওয়া যায়। এই  প্রেক্ষিতে মহাভারতের বহু ঘটনার মধ্যে গোয়েন্দা সাহিত্যের আভাস পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া বাইবেলে দানিয়েলের কাহিনি, বুদ্ধ জাতকের কিছু গল্পেও এমন বুদ্ধিমত্তার কথা জানা যায় যা থেকে ওই গল্পগুলোর মধ্যে গোয়েন্দা সাহিত্যের বীজ রয়েছে বলে মনে হয়। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের কথা আমরা সকলেই জানি এবং শ্রীরামপুরের পাদ্রী উইলিয়াম কেরির অবদান সম্পর্কে আমরা কমবেশি অবগত। ১৮১২ সালে কেরি সাহেব ‘ইতিহাসমালা’ নামে একটি গল্প সংকলন প্রকাশ করেন। এই সংকলনের ১১নং ও ১৪৬ নং গল্পের বিষয়বস্তুতে গোয়েন্দা সাহিত্যের ছোঁয়া পাওয়া যায়। এমন কি আরব্য উপন্যাসের নানা কাহিনিতেও যেন গোয়েন্দা গল্পের গন্ধ লেগে আছে।

         স্বভাবতই মনে প্রশ্ন জাগে তাহলে ঠিক কাকে গোয়েন্দা সাহিত্য বলা হবে? কী কী গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকলে তাকে আমরা গোয়েন্দা সাহিত্যের ধারায় ফেলব?
এই প্রশ্নের উত্তরে সমালোচকদের মধ্যে নানা মতবিরোধ মতান্তর দেখা যায়। তবে এদের মধ্যে সমালোচক এস এস ভ্যান ডাইন কৃত বৈশিষ্ট্যগুলো সমাদৃত হয়েছে। ডাইনের এই নিয়মগুলি ১৯২৮ সালে ‘আমেরিকান ম্যাগাজিন’ পত্রিকায় ‘টুয়েন্টি রুলস ফর রাইটিং ডিটেকটিভ স্টোরিজ’ নামে প্রকাশিত হয়। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু নিয়ম-
1.রহস্য সমাধানে গোয়েন্দার পাশাপাশি পাঠকদের সুযোগ দিতে হবে।
2. গোয়েন্দা কাহিনির সমান্তরালে কোনো রোমান্টিক কাহিনী থাকতে পারবে না।
3. খুন ও মৃতদেহ কাহিনির মধ্যে থাকতেই হবে।
4. অপরাধের উদ্দেশ্য সব সময়েই ব্যক্তিগত হতে হবে।
5. কাহিনিতে একজন গোয়েন্দাকে থাকতেই হবে
এরকম অনেকগুলি নিয়মের কথা তিনি বলেছেন কিন্তু সব নিয়মগুলি গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেনি। অনেকেই এর বিরোধিতা করেছেন।

           গোয়েন্দা সাহিত্যের সূচনা লগ্ন নিয়ে নানাবিধ মতামত থাকলেও অষ্টাদশ শতাব্দীর ফরাসি পণ্ডিত ভলতেয়ার সৃষ্ট চরিত্র জাদিককে আধুনিক গোয়েন্দা বলা যায়। সুকুমার সেন যদিও বলেছেন পুলিশি ব্যবস্থা প্রবর্তনের পরবর্তীকালে রচিত কাহিনিই সঠিক অর্থে গোয়েন্দা সাহিত্য। সেই হিসেবে ফরাসি লেখক ফ্রাঁসোয়া ভিদক্-কে প্রথম ক্রাইম কাহিনির রচয়িতা বলে মনে করা হয়। তবে এডগার এলান পো নিয়মিত রহস্য কাহিনি লিখে পাঠক সমাজের মন জয় করে নেন। এডগার সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্রটির নাম মঁসিয়ে দুপ্যাঁ। সুকুমার সেন এই চরিত্রটি সম্পর্কে বলেছেন- ‘পো-এর মঁসিয়ে দুপ্যাঁ (dupin)  সম্পূর্ন বাস্তব প্রথম ডিটেকটিভ মূর্তি প্রধানত যার অনুসরণ ও অনুকরণ আমরা পরবর্তীকালে করে এসেছি’। পো-এর পরে ফরাসি লেখক এমিল গাবরিও(১৮৩২—৭৩) উপন্যাসের প্রেক্ষাপটে গোয়েন্দা কাহিনি রচনা করলেন তবে তিনি তাঁর পূর্বসূরীদের অনুসরণ করেই গোয়েন্দা চরিত্র নির্মাণ করেছেন। গোয়েন্দা সাহিত্য রচনায় অ্যানা ক্যাথরীন গ্রীন (১৮৪৬-১৯৩৫) এবং ফারগাস হিউম (১৮৫৯-১৯৩২) বিশেষ কৃতিত্বের পরিচয় রেখেছেন। ইংরেজি সাহিত্যে আর্থার কোনান ডয়েল (১৮৫৯-১৯৩০) সৃষ্ট চরিত্র শার্লক হোমস সমগ্র বিশ্ববাসীর হৃদয়কে জয় করে নিয়েছিল। কোনান ডয়েল এই চরিত্রটিকে এমনভাবে এঁকেছেন যে শার্লক হোমসকে অনেকেই কাল্পনিক চরিত্রের পরিবর্তে বাস্তব চরিত্র বলে মনে করেছেন। এমন গল্পও শোনা যায় হোমসের বাড়ির ঠিকানা ২২১/ বি বেকার স্ট্রিট, লন্ডনে অনেক পাঠক সেই ঠিকানায় চিঠিও পাঠিয়েছেন। শার্লক হোমসকে নিয়ে লেখা প্রথম গল্প-‘এ স্ক্যান্ডাল ইন বহেমিয়া’। কোনান ডয়েলের চমৎকার লেখনীর জাদুস্পর্শে শার্লক হোমসের জনপ্রিয়তা শিখরে পৌঁছেছিল। যে কারণে হোমসকে মৃত্যুর মুখ থেকে তুলে এনে আবার নতুন করে পাঠকের কাছে গল্প শোনাতে হল। শার্লক হোমসের প্রভাব পরবর্তীকালে অনেক গোয়েন্দা সাহিত্যের সৃষ্ট চরিত্রের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশ বক্সী চরিত্রটির উপরে হোমসের প্রভাব পড়েছিল। যদিও তাদের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে । তবে শার্লক হোমসের স্রষ্টার প্রতি কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকেই। সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট অমর চরিত্র ফেলুদার মুখেও এমন কথা শোনা যায়। লন্ডনে গিয়ে বেকার স্ট্রিটে দাঁড়িয়ে ফেলুদা শার্লক হোমসের উদ্দেশ্যে বলেছিল- ‘গুরু, কিন্তু তুমি ছিলে বলেই আমরা আছি’। কোনান ডয়েলের পরবর্তীকালে যেসকল গোয়েন্দা সাহিত্যিককে আমরা পাই তাদের মধ্যে রয়েছেন হারনাং(১৮৬৬-১৯২২), জয়েস এমারসন প্রেস্টন মাডক (১৮৪২-১৯৩৪), বরাট ইউসটেস (১৮৫৪-১৯৪৩), আর্থার মরিসন (১৮৬৩-১৯৪৫), ম্যাকডোনাল্ড বডকিন (১৮৫০–১৯৩৩)প্রমুখ। অসংখ্য লেখক রয়েছেন যারা এই শাখাকে সমৃদ্ধ করেছেন। মূলত ইংরেজিতে গোয়েন্দা সাহিত্যের এক বিপুল সম্ভার রয়েছে। রহস্য রোমাঞ্চ ভরপুর এই ধরণের গোয়েন্দা কাহিনি লিখতে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন এবং নিজস্ব দক্ষতায় সৃষ্টি করে গেছেন একের পর এক গোয়েন্দা কাহিনি। তাদের রচনা পরিপুষ্টি দান করেছে গোয়েন্দা সাহিত্যের শাখাকে।

                 বিদেশি গোয়েন্দা কাহিনির সমান্তরালে বাংলা ভাষায় গোয়েন্দা কাহিনিরও এক প্রাচুর্যময় ভান্ডার পরিলক্ষিত হয়। আগেই বলেছি সুকুমার সেন তার গ্রন্থে জানিয়েছেন ভারতবর্ষীয় গোয়েন্দা সাহিত্যের বিকাশ বহু শতাব্দী আগে থেকে। তবে বাংলায় গোয়েন্দা কাহিনি প্রথম লিখেছিলেন দারোগা বাঙালি যুবক বরকতউল্লা। সেই সময়ে ঠগী ও ডাকাতের খুব অত্যাচার ছিল। বরকতউল্লা সেই নিয়েই এক গোয়েন্দা গল্প ফেঁদেছিলেন ।তবে এটি ইংরাজিতে পাওয়া গিয়েছিল পরে তা বাংলায় অনুবাদ করে নাম দেওয়া হয় ‘বাঁকাউল্লার দপ্তর’। এছাড়া আরো একটি বইয়ের খোঁজ পাওয়া যায় গিরিশচন্দ্র বসুর ‘সেকালের দারোগার কাহিনী’ নামে। তবে এই দুটি বইয়েই রহস্য বা অপরাধীদের উপদ্রবের কাহিনি থাকলেও প্রথম সার্থক গোয়েন্দা কাহিনির রচয়িতা হিসেবে প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়(১৮৫৫-১৯৪৭)নাম স্মরণ করা যায়। তাঁর লিখিত ‘দারোগার দপ্তর’ মাসে মাসে প্রকাশিত হত। সেই সময়ে মূল ধারার সাহিত্য রচনার পাশাপাশি আরও একটি ধারা সাধারণ মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল সেটা হল বটতলা সাহিত্য। মূলত নিম্ন রুচির পরিচায়ক বটতলা সাহিত্যকে অনেকেই সাহিত্যের ধারায় স্বীকৃতি দেননি। এই বটতলার সাহিত্য রচনার ধারায় অন্যতম প্রধান লেখক ভুবনমোহন মুখোপাধ্যায় রচিত ‘হরিদাসের গুপ্তকথা’ কে গোয়েন্দা সাহিত্যের মর্যাদা অনেকেই দিয়েছেন। এরপর গোয়েন্দা সাহিত্যের ধারায় শরচন্দ্র দেবের গোয়েন্দা কাহিনীর পুস্তকমালার পরিচয় পাওয়া যায়। এই গ্রন্থটি বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল । গোয়েন্দা কাহিনি রচনায় পাঁচকড়ি দে – এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি কিছু উপন্যাস লিখেছিলেন। তবে কোনো একটি নির্দিষ্ট গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে তিনি সব উপন্যাস লেখেননি। তার লেখনীতে বেশ কয়েকজন গোয়েন্দা চরিত্রকে আমরা পাই । এরপর এই ধারায় অম্বিকাচরণ গুপ্ত(১৮৫৯-১৯১৫)কে পাই যিনি ‘গোয়েন্দার গল্প’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছিলেন যেখানে ‘স্বর্ণবাঈ’ নামে একটি উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি মূলত সাংসারিক অভাব অনটনে ক্রাইম কাহিনি লিখতে শুরু করেছিলেন কিন্তু তার প্রথম দিকের কয়েকটি উপন্যাস বটতলা থেকে ছাপা হয়েছিল। এছাড়াও দীনেন্দ্রকুমার রায়, হরিসাধন মুখোপাধ্যায়, উপেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়, মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্য রচনায় এগিয়ে আসেন। এমন ভাবেই গোয়েন্দা সাহিত্যের এক ক্ষীণ ধারা বয়ে চলেছিল। কিন্তু বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্যের মোড় ফিরে গিয়েছিল হেমেন্দ্রকুমার রায়ের আগমনের পর থেকে। তিনি এসে গোয়েন্দা কাহিনিতে এক অভিনব মাত্রা যোগ করেছিলেন । সুকুমার সেন এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন – “হেমেন্দ্রকুমারের কাহিনির বিষয় বা বস্তু প্রায় সম্পূর্ণভাবে দেশি রূপ ও রস প্রাপ্ত হয়েছিল”
তিনি গোয়েন্দা কাহিনির মধ্যে বৈজ্ঞানিক ভাবনাকে সংযুক্ত করেছিলেন। এরপর ক্রাইম কাহিনির ধারায় বা ক্রম বিবর্তনে নীহাররঞ্জন গুপ্তের নাম করা যায়। তাঁর সৃষ্ট কিরীটি চরিত্রটি পাঠক মনের অন্দরে জায়গা করে নিয়েছিল। তিনি গোয়েন্দা কাহিনি লিখে বেশ জনপ্রিয় লেখক হয়ে উঠেছিলেন। গোয়েন্দা সাহিত্যের বিকাশের পথে যিনি নিজের নাম স্বর্নাক্ষরে খোদাই করেছিলেন এবং পাঠকমনে আজও সমানভাবেই উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে তিনি আর কেউ নন তিনি স্বয়ং শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়(১৮৯৯-১৯৭০) গোয়েন্দা সাহিত্যের বিস্তৃত পরিসরের মধ্যে তার সৃষ্ট চরিত্র সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ বক্সী যেন বাঙালির কাছে এক আবেগে পরিনত হয়েছে। ব্যোমকেশের প্রখর ব্যক্তিত্ব, সুদর্শন চেহারা, সূক্ষ্ম বুদ্ধি ও সত্যবতীর সঙ্গে প্রেমময় দাম্পত্য পাঠকের মনের মনিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছে। কিছু চরিত্র এমন হয় যে তারা কেবল বইয়ের পাতায় আবদ্ধ থাকে না, চরিত্রগুলো যেন জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যায়। ব্যোমকেশ বক্সী ঠিক তেমনই একটা চরিত্র। ১৯৭৫ সালে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে শরদিন্দু বলেছিলেন-
“…গোয়েন্দা কাহিনীকে আমি ইন্টেলেকচুয়াল লেভেলে রেখে দিতে চাই ওগুলো নিছক গোয়েন্দা কাহিনী নয় প্রতিটি কাহিনীকে আপনি শুধু সামাজিক উপন্যাস হিসেবেও পড়তে পারেন কাহিনীর মধ্যে আমি পরিচিত পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই মানুষের সহজ সাধারণ জীবনে কতগুলি সমস্যা অতর্কিতে দেখা দেয়… ব্যোমকেশ তারই সমাধান করে…”। সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ বক্সীকে নিয়ে তিনি লিখেছেন অজস্র গল্প।  প্রথমে আর্থার কোনান ডয়েলের শার্লক হোমসের অনুসরণে গোয়েন্দা কাহিনি লিখতে শুরু করলেও অচিরেই তিনি তাঁর লেখনীর মধ্যে মৌলিকতার ছাপ রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। অনেকেই শার্লক হোমসের সঙ্গে ব্যোমকেশের চরিত্রে অনেক মিল খুঁজে পান। দুই নিষ্ঠাবান গোয়েন্দার মধ্যে অনেক মিল থাকলেও অমিলও রয়েছে প্রচুর। ব্যোমকেশের কয়েকটি বিখ্যাত গোয়েন্দা কাহিনি হল- ‘রক্তমুখী নীলা’, ‘দুর্গ রহস্য’,’ ‘চিত্রচোর’, ‘পথের কাঁটা’, ‘মাকড়সার রস’ ইত্যাদি।
শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় পরবর্তীকালে গোয়েন্দা গল্প লিখেছেন মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য(১৯০৯-৩৯) তাঁর শ্রেষ্ঠ গোয়েন্দা চরিত্র মিস্টার হুকাকাশি। শিবরাম চক্রবর্তীকে(১৯০৩-৮০) আমরা সাধারণত হাসি বা মজার গল্প লিখতেই বেশি দেখেছি কিন্তু তিনিও গোয়েন্দা কাহিনি রচনা করেছেন। তিনি কল্কেকাশি নামের এক মজাদার চরিত্র নির্মাণ করেছেন। বিখ্যাত ভাষাতাত্ত্বিক ও অধ্যাপক সুকুমার সেন(১৯০০-১৯৯২) সাহিত্যের ইতিহাসের একজন বিশেষজ্ঞ। তাঁর গ্রন্থ সাহিত্যের ইতিহাস জানার জন্য অমূল্য সম্পদ। অধিকাংশ পাঠকই তাঁকে ভাষাতাত্ত্বিক হিসেবেই চেনেন কিন্তু সুকুমার সেন গোয়েন্দা কাহিনিও রচনা করেছেন। এক্ষেত্রেও তিনি  ঐতিহাসিকতা বজায় রেখেছেন। যে কালিদাসকে আমরা মহাকবি হিসেবে চিনি তিনি তাঁকে গোয়েন্দা রূপে নির্মাণ করেছেন। তাঁর লেখা গোয়েন্দা কাহিনির প্রথম সংকলন ‘কালিদাস তার কালে’(১৯৭৬)। কালিদাস রাজকন্যা ইন্দুমতীকে বিবাহ করেছেন এবং রাজ্য পরিচালনার বিভিন্ন রহস্যজনক কাজে কালিদাস সহায়তা করে থাকেন। রাজসভার নবরত্নদের মধ্যে বেতাল ভট্ট, অগ্নিশর্মা আয়ুর্বেদাচার্য ধন্বন্তরি তাঁকে বিভিন্ন রহস্যের জট ছাড়াতে সহযোগিতা করেন। সুকুমার সেন প্রায় পঞ্চাশটি গল্প কালিদাসকে নিয়ে লিখেছেন।
বিখ্যাত ছোটো গল্পকার প্রেমেন্দ্র মিত্র(১৯০৪-৮৮) একজন জনপ্রিয় সাহিত্যিক। তিনি পাঠকের মনে ঘনাদা চরিত্রটি নির্মাণের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। পরাশর বর্মা নামে একজন ডিটেকটিভ চরিত্রের নির্মাণ করে অনেকগুলো গোয়েন্দা কাহিনি লিখেছেন। পরাশর বর্মার বিশিষ্টতা হল তিনি নিজেকে একজন বড় কবি মনে করেন এবং তা ছাপাতে আগ্রহী। কবিযশপ্রার্থী পরাশর বর্মা তার স্বরচিত একটি পছন্দের কবিতাও পত্রিকার সম্পাদক কৃত্তিবাসকে শুনিয়ে ছিলেন। কবিতাটি ছিল- ‘পকৌড়ি তুমি অতি তুচ্ছ, আশা তবু নয় মোটে উচ্চ, কী তেলে যে ভাজা হও নাই তবে পরোয়া, তবু তব সাজ কভু পায় নাকো ঘরোয়া’। বোঝাই যায় প্রেমেন্দ্র মিত্র এক মজার চরিত্র নির্মাণ করতে চেয়েছেন যা পাঠককে ‘dramatic relief’ দেবে।
ব্যোমকেশ এরপর বাংলা সাহিত্যে গোয়েন্দা যে গোয়েন্দা চরিত্র পাঠক সমাজে বিপুলভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল সে হল ফেলুদা। সত্যজিৎ রায়ের(১৯২১—৯২) নির্মিত চরিত্র ফেলুদার প্রকৃত নাম ছিল প্রদোষচন্দ্র মিত্র। বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় দর্শক মনে জায়গা করে নিয়েছিলেন তাঁর অসাধারণ কিছু ছায়াছবির জন্য। পাশাপাশি ফেলুদা চরিত্রটির জন্য তিনি কিশোর মনেও গভীর ভাবে দাগ কেটে গেছেন। ব্যোমকেশ ও ফেলুদাকে নিয়ে বাঙালি যেন ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের মতো দুটি দলে ভাগ হয়ে যায়। ব্যোমকেশের থেকেও ফেলুদাকে নিয়ে অনেক বেশি আলোচনা-সমালোচনা করা হয়েছে। ফেলুদাকে নিয়ে প্রথম ছোটোগল্প ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’ ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত হয়। অজিতের মতো তপসে হল ফেলুদার সাকরেদ। ‘সোনারকেল্লা’, ‘কৈলাসে কেলেঙ্কারি’,’ বাক্স রহস্য’, ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ ইত্যাদি বিখ্যাত গোয়েন্দা কাহিনি চিরকালীন মানুষের মনে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শুধু বইয়ের পাতায় নয় সত্যজিৎ রায় গল্পগুলিকে সিনেমায় রূপান্তরিত করেছিলেন যে কারণে এর জনপ্রিয়তা অন্য মাত্রায় পৌঁছেছিল। এখনও ফেলুদা অবলম্বনে সিনেমা সিরিজ তৈরি হয়ে চলেছে। চরিত্রটি আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে যেন মিলেমিশে গেছে।
স্বনামধন্য সাহিত্যিক সমরেশ বসু(১৯২৪-৮৮) অসামান্য গল্প উপন্যাস লিখেছেন। কেবল তাই নয় তাঁর সৃষ্ট গোগল চরিত্রটি বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। তবে তিনি বড়োদের জন্য আলাদা ও ছোটোদের জন্য আলাদা করে গোয়েন্দা নির্মাণ করেছেন। বড়দের জন্য নির্মিত ডিটেকটিভ হলেন অশোক ঠাকুর এবং ছোটদের জন্য গোগল। সাহিত্যিক নারায়ণ সান্যাল একাধিক বই লিখেছেন বিভিন্ন বিষয়ের উপরে। উপন্যাস, বিজ্ঞান বিষয়ক, স্থাপত্যবিদ্যা, শিশুসাহিত্য, ভাস্কর্য, শিল্প, জীবজগৎ বহু বিষয়ে তাঁর লেখনী শৈলী পাঠকের মুগ্ধ ও সমৃদ্ধ করেছে। তিনিও বড়োদের ও ছোটোদের জন্য গোয়েন্দা কাহিনি লিখেছেন। তাঁর নির্মিত গোয়েন্দা চরিত্র যথাক্রমে পি কে বাসু ও শ্রীমান হাবু। তাঁর রচিত গোয়েন্দা গল্পগুলো কাঁটা সিরিজ নামে পরিচিত। গোয়েন্দা সাহিত্যকে আরো সমৃদ্ধ করতে এগিয়ে আসেন সাহিত্যিক নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী(১৯২৪-২০১৮)। তিনিও আমাদের কাছে কবি হিসেবেই পরিচিত। তবে তাঁর গোয়েন্দা ভাদুড়ি মশাই তার ডিটেকটিভ বুদ্ধির জোরে মন কেড়েছেন পাঠকদের। এরপর ক্রমবিবর্তনের ধারায় স্মরণ করা যেতে পারে রঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়(১৯২৭-৯৮)কে। অনেকেই হয়তো তাঁর নাম জানেন না কিন্তু যারা গোয়েন্দা সাহিত্যকে ভালোবাসেন তারা নিশ্চয়ই জানেন তিনি রহস্যময় গোয়েন্দা কাহিনি রচনায় সিদ্ধহস্ত ছিলেন। তাঁর সৃষ্ট চরিত্রের নাম অভ্রদীপ। সাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ(১৯৩৬-২০১২) তাঁর নির্মিত গোয়েন্দা চরিত্র কর্নেল নিলাদ্রি সরকার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি একটি চরিত্র নিয়েই ছোটো ও বড়োদের জন্য আলাদা করে গল্প লিখেছেন। বাঙালির অত্যন্ত প্রিয় সানডে সাসপেন্সে মাঝে মাঝেই কান পাতলে শোনা যায় কর্নেল নিলাদ্রি সরকারের রহস্যময় গোয়েন্দা কাহিনির গল্প। সাহিত্যিক পূর্ণেন্দু পত্রীর(১৯৩১-৯৭) নাম কমবেশি সকলেই জানেন তাঁর কাহিনির নায়কের নাম জাম্বো। ব্যোমকেশ চরিত্রটিকে আরও বাস্তবায়িত করে তোলার জন্য পূর্ণেন্দু পত্রী তাঁর সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্রটির সঙ্গে ব্যোমকেশ বক্সীর একটি সুন্দর সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। জাম্বো ব্যোমকেশ বক্সীর ছেলে। বাবা মারা যাওয়ার পর যেন উত্তরাধিকারসূত্রে সে রহস্যের সমাধান করে চলেছে। সাহিত্যিক অদ্রীশ বর্ধনকে(১৯৩২-২০১৯) সকলেই কল্পবিজ্ঞান রচয়িতা হিসেবে চেনেন। কিন্তু তিনিও গোয়েন্দা কাহিনি রচনা করেছেন। এই শাখাকে সমৃদ্ধ করে তোলার জন্য তিনি ইন্দ্রনাথ চরিত্রকে নির্মাণ করে অনেকগুলি গল্পের জন্ম দিয়েছেন। গোয়েন্দা সাহিত্যকে আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে কলম তুলে নিয়েছেন সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়(১৯৩৪—২০১২) কাকাবাবু ও সন্তুর জুটি পাঠক মনে সাড়া ফেলেছিল। রহস্য রোমাঞ্চ ভরপুর অ্যাডভেঞ্চারে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে এগিয়ে যান তারা। ভীষণভাবে জনপ্রিয় এই চরিত্র দুটি নিয়ে তৈরি হওয়া  সিনেমার পর্দাও দর্শক মন্ডলীকে আনন্দ দান করেছে। বর্তমান সময়ের একজন জনপ্রিয় ও বিখ্যাত সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়(১৯৩৫-) তাঁর নানাবিধ লেখালেখির মধ্যে জায়গা করে দিয়েছেন বরদাচরণ, শবর দাশগুপ্তের মতো গোয়েন্দাদের। তিনি মজা ও সিরিয়াস দুই ধরণেরই গোয়েন্দা কাহিনি লিখেছেন। এই ধরণের গোয়েন্দা কাহিনি তাঁকে আরো জনপ্রিয় করে তুলেছে। গোয়েন্দা কাহিনির শাখাকে সমৃদ্ধ ও পরিপূর্ণ রূপ দেওয়ার জন্য ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়(১৯৪১-)-এর নাম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর সৃষ্ট পাণ্ডব গোয়েন্দা এই ধারার এক মাইলফলক। অনেকেই মনে করেন তিনি এনিড ব্লাইটনের ফেমাস ফাইভ অবলম্বনে পাণ্ডব গোয়েন্দাকে নির্মাণ করছেন। বাবলু বিলু ভোম্বল বাচ্চু ও বিচ্ছুকে নিয়ে গড়ে ওঠা এই পাঁচ গোয়েন্দা শিশু থেকে বড়ো সকলের কাছেই ভালোবাসা পায়। বিভিন্ন রহস্য সমাধানে এই পাণ্ডব গোয়েন্দাদের সাহায্যে তাদের সঙ্গে থাকে পঞ্চু নামের একটি দেশি কুকুর। বিখ্যাত এই গোয়েন্দা দলটি চিরকাল পাঠকের মনে বিরাজ করবে। বর্তমান সময়ে আরও একজন স্বনামধন্য লেখক সমরেশ মজুমদার(১৯৪১-) সৃষ্টি করেছেন অর্জুন নামের একটি সত্যানুসন্ধানী চরিত্রকে। পাঠকের কাছে বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে এই চরিত্রটি। সাম্প্রতিক একেনবাবু চরিত্রটি পাঠক ও দর্শকের কাছে সমাদর লাভ করছে। hoichoi ওটিটি প্লাটফর্মে এই সিরিজটি বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। সুজন দাশগুপ্ত গোয়েন্দা একেনবাবুকে নিয়ে বেশ কিছু গল্প ও উপন্যাস রচনা করেছেন। শিশু সাহিত্যিক ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায়(১৯৫৮-) বেশ কিছু ডিটেকটিভ কাহিনি লিখেছেন তাঁর সৃষ্ট জগদ্বন্ধু মুখার্জি চরিত্রটিকে কেন্দ্র করে। এছাড়াও একেবারে নতুন প্রজন্মের সুকান্ত গঙ্গোপাধ্যায়, ঋতা  বসু, অনির্বাণ বসু, ঘনশ্যাম চৌধুরী, অনন্যা দাশ, কানাইলাল বসু প্রমুখ গোয়েন্দা সাহিত্য রচনা করে চলেছেন এবং এই ধারাকে আরো ঋদ্ধ ও পরিপূর্ণ করে তুলছেন।


          গোয়েন্দা সাহিত্য রচনায় নারীরাও পিছিয়ে ছিলেন না। হয়তো সংখ্যাটা কম কিন্তু অনেকেই লিখেছেন এই ধরণের গল্প। জানা যায়, বাঙালি মেয়ের লেখা প্রথম গোয়েন্দা গল্প সুকুমার সেনের মতে ১৩১০ বঙ্গাব্দে কুন্তলীন পুরস্কার প্রাপ্ত সরলাবালা দাসীর ‘ঘড়ি চুরি’।অনেকেই লিখেছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাবতী দেবী সরস্বতী, ওনার সৃষ্ট চরিত্র কৃষ্ণা। এছাড়া ষাটের দশকে নলিনী দাশ অনেকগুলি গোয়েন্দা কাহিনি লিখেছিলেন এবং তাঁর গোয়েন্দা চরিত্রটির নাম গন্ডালু। নারীদের মধ্যে গোয়েন্দা সাহিত্য রচনায় সব থেকে যিনি সুখ্যাতি পেয়েছিলেন তিনি হলেন সুচিত্রা ভট্টাচার্য। তিনি প্রজ্ঞাপারমিতা মুখার্জি নামে গোয়েন্দা চরিত্র নির্মাণ করেছেন তবে চরিত্রটি মিতিন মাসি নামেই পরিচিত।
গোয়েন্দা সাহিত্য এমন একটি বিষয় যা বোধহয় আট থেকে আশি সকলেরই পছন্দের। সেই জনপ্রিয়তার কারণে এই শাখা এক বিস্তৃত পরিসরে সমৃদ্ধ হয়ে চলেছে। সাম্প্রতিক কালেও অনেকেই এই বিষয় নিয়ে চর্চা করছেন। আগামী ভবিষ্যতে হয়তো আমরা আরো অনেক গোয়েন্দাকে পাবো যারা পাঠকের হৃদয় ও মননে জায়গা করে নেবে।



গ্রন্থপঞ্জি
১. ক্রাইম কাহিনীর কালক্রান্তি-সুকুমার সেন
২. রহস্য গল্পের নায়কেরা- প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত
৩. কোরক সাহিত্য পত্রিকা (বাংলা গোয়েন্দা সাহিত্য সংখ্যা)

/ —– /