ল্যাবরেটরি গল্পের প্রশ্নোত্তর , পর্ব – ২
ল্যাবরেটরি গল্প – চরিত্র পরিচয়
■ নন্দকিশোর মল্লিক –
১) লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে পাস করা ইঞ্জিনিয়র
২) তিনি ছিলেন ব্রিলিয়ান্ট ছাত্র
৩) ‘স্কুল থেকে আরম্ভ করে শেষ পর্যন্ত পরীক্ষার তোরণে তোরণে ছিলেন পয়লা শ্রেণির সওয়ারি’
৪) ‘ওঁর বুদ্ধি ছিল ফলাও’
৫) ‘ওঁর প্রয়োজন ছিল দরাজ’
৬) ‘ওঁর অর্থসম্বল ছিল আঁট মাপের।’
৭) রেলওয়ের কোম্পানির দুটো বড় ব্রিজ তৈরির কাজের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন।
৮) ‘ওঁর নিজের কাজে কর্তারা ওঁকে জিনিয়াস বলত, নিখুঁত হিসাবের মাথা ছিল তাঁর’
৯) থাকতেন শিকদারপাড়ার গলির একটা দেড়তলা বাড়িতে।
১০) ‘কারখানা ঘরের দাগদেওয়া কাপড় বদলাবার ওঁর সময় ছিল না’।
১১) ‘লোকটা ছিল সৃষ্টিছাড়া, ওঁর ছিল বিজ্ঞানের পাগলামি’
১২) ‘উনি হেঁকে উঠে বলতেন, ক্ষমতা আছে আমাদের মগজে, অক্ষমতা আছে আমাদের পকেটে’
১৩) ‘ছেলেদের জন্য বিজ্ঞানের বড় রাস্তাটা খুলে দিতে হবে বেশ চওড়া করে, এই ছিল ওঁর পণ’
১৪) নন্দকিশোর মারা গেলেন প্রৌঢ় বয়সে কোন এক দুঃসাহসিক বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার অপঘাতে
১৫) ‘তাঁর নেশা ছিল বর্মা চুরুট আর ল্যাবরেটরি’
■ সোহিনী (১নং) –
১) বিশ বৎসরের পাঞ্জাবি মেয়ে
২) ‘জ্বলজ্বলে তার চোখ – ঠোঁটে একটি হাসি আছে, যেন শান দেওয়া ছুরির মতো’
৩) ‘মেয়েটির ভিতর থেকে ঝকঝক করছে ক্যারেক্টরের তেজ’
৪) ‘বোঝা গেল ও নিজের দাম নিজে জানে’
৫) ‘পশ্চিমী ছাঁদের সুকঠোর এবং সুন্দর তার চেহারা’
■ নীলা (২নং) –
১) নন্দকিশোর ও সোহিনীর মেয়ে নীলা
২) নামকরণ হয়েছিল – নীলিমা, মেয়ে নিজে তা বদল করে রেখেছে নীলা
৩) ‘মেয়েটি একেবারে ফুটফুটে গৌরবর্ণ’
৪) ‘মেয়ের দেহে ফুটে উঠেছে কাশ্মীরী শ্বেতপদ্মের আভা’
৫) ‘চোখেতে নীলপদ্মের আভাস, আর চুলে চমক দেয় যাকে বলে পিঙ্গলবর্ণ’
৬) নীলার স্বামী অল্প বয়সের মাড়োয়ারি ছেলে, তার টাকা পৈতৃক, শিক্ষা এ কালের।
৭) সিভিল মতে বিয়ে করেছিল।
৮) কিছুদিনের মধ্যে টাইফায়েডে ছেলেটি মারা যায়।
■ রেবতীর পিসি (৪নং) –
১) রেবতী ওর পিসির হাতে মানুষ।
২) ‘ওর পিসির আচারনিষ্ঠা একেবারে নিরেট’।
৩) ‘এতটুকু খুঁত নিয়ে ওঁর খুঁতখুঁতুনি সংসারকে অতিষ্ঠ করে তুলত’
৪) ‘তাঁকে ভয় না করত এমন লোক ছিল না পরিবারে’
৫) ‘ওঁর হাতে রেবতীর পৌরুষ গেল ছাতু হয়ে’
■ বোটানিক্যাল গার্ডেনে নীলার সাজ (৫নং) –
১) পরণে নীলচে সবুজ বেনারসি শাড়ি, ভিতর থেকে দেখা যায় বাসন্তী রঙের কাঁচুলি
২) ‘কপালে তার কুঙ্কুমের ফোঁটা’
৩) ‘সূক্ষ একটু কাজলের রেখা চোখে’
৪) ‘কাঁধের কাছে ঝুলেপড়া গুচ্ছকরা খোঁপা’
৫) ‘পায়ে কালো চামড়ার ‘পরে লাল মখমলের কাজ করা স্যান্ডেল’
■ পুজারী বামুনের বেশ (৫নং) –
১) ‘পরণে চেলি’
২) ‘কপালে ফোঁটা তিলক’
৩) ‘টিকিতে ফুল বাঁধা’
৪) ‘বেলের আঠায় মাজা মোটা পইতে গলায়’
■ রেবতী ভট্টাচার্য (৫নং) –
১) ‘রঙ মসৃণ শ্যামবর্ণ, একটু হলদের আভা আছে।’
২) কপাল চওড়া, চুলগুলো আঙুল বুলিয়ে বুলিয়ে উপরে তোলা’
৩) ‘চোখ বড় নয় কিন্তু তাতে দৃষ্টিশক্তির স্বচ্ছ আলো জ্বলজ্বল করছে’
৪) ‘নীচের মুখের বেড়টা মেয়েলি ধাঁচের মোলায়েম’
৫) ‘ওর মুখে যে একটা দুর্বল মাধুর্য ছিল, তাতে পুরুষ বালকের মনে মোহ আনতে পারত
■ মানিক (৮নং) –
১) নন্দকিশোরের ল্যাবরেটরির হেডমিস্ত্রি।
২) “আশ্চর্য তার হাত ছিল। অত্যন্ত সূক্ষ কাজে এক চুল তার নড়চড় হত না, কলকবজার তত্ত্ব বুঝে নিতে তার বুদ্ধি ছিল অভ্রান্ত।”
৩) “তাকে উনি(নন্দকিশোর) অতি নিকট বন্ধুর মতো দেখতেন।
৪) “গাড়ি করে নিয়ে যেতেন বড় বড় কারখানার কাজ দেখাতে।”
৫) “এ দিকে সে ছিল মাতাল, ওঁর অ্যাসিস্টেন্টরা তাকে ছোটলোক বলে অবজ্ঞা করত”
■ অমূল্য আড্ডি (৯নং) –
১) অধ্যাপক মন্মথ চৌধুরীর সতীর্থ।
২) গুজরানওয়ালার ডাক্তার
৩) বিশ পঁচিশ বছর প্র্যাকটিস করেছেন।
৪) কিছু বিষয়সম্পত্তিও জমিয়েছেন।
৫) হঠাৎ বিধবা স্ত্রী আর ছেলেমেয়ে রেখে মরেছেন হার্টফেল করে।
ল্যাবরেটরি – ক্রমমূলক প্রশ্ন
১) নন্দকিশোরের বক্তব্য অনুযায়ী –
৹ ওকে নন্দকিশোরি করতে হবে, সেটা যে সে মেয়ের কাজ নয়
৹ আমি অসবর্ণ বিবাহ পছন্দ করি নে
৹ স্বামী হবে এঞ্জিনিয়র আর স্ত্রী হবে কোটনা কুটনি, এটা মানবধর্মশাস্ত্রে নিষিদ্ধ।
৹ পতিব্রতা স্ত্রী চাও যদি, আগে ব্রতের মিল করাও
২) অধ্যাপক চৌধুরীকে বশ করতে যে সব খাবার খাইয়েছিল তার ক্রম –
চা – রুটি টোস্ট – অমলেট – ইলিশমাছের বড়া
৩) অধ্যাপক চৌধুরীর সোহিনীর প্রতি বক্তব্য অনুযায়ী –
৹ “শিলা ভাসে জলে। মেয়েদের মধ্যেও দৈবাৎ কোথাও কোথাও বুদ্ধির প্রমাণ মেলে দেখছি”
৹ “খনি থেকে সোনা ওঠে, সে খাঁটি সোনা যদিও তাতে মিশেল থাকে অনেক কিছু। তুমি সেই ছদ্মবেশী সোনার ঢেলা।”
৹ “জান মেট্রিয়ার্কি সমাজ কাকে বলে ? যে সমাজে মেয়েরাই হচ্ছে পুরুষের সেরা।”
৹ “মনোবিজ্ঞান বলে, বাংলাদেশে মেট্রিয়ার্কি বাইরে নেই, আছে নাড়িতে।”
৪) সোহিনীর বক্তব্যের ক্রম –
৹ আমি তো গোড়াতেই নাম ডুবিয়েছি, সত্যি কথা বলতে আমার বাধে না।
৹ আজন্ম তপস্বিনী নই আমরা। ভড়ং করতে করতে প্রাণ বেরিয়ে গেল আমাদের।
৹ দ্রৌপদীকুন্তীদের সেজে বসতে হয় সীতা পাবিত্রী
৹ গায়ে আমার দাগ লেগেছে কিন্তু মনে ছাপ লাগেনি।
৹ আমার শুকনো পাঞ্জাবি মন। আমি সমাজের আইনকানুন ভাসিয়ে দিতে পারিদেহের টানে পড়ে, কিন্তু প্রাণ গেলেও বেইমানি করতে পারবো না।
৫) নন্দকিশোরের সোহিনীকে বলে যাওয়া সংলাপের ক্রম –
৹ মরবার একমাত্র আরাম এই যে, সেখান থেকে তুমি আমাকে খুঁজে বের করে ফিরিয়ে আনতে পারবে না।
৹ মানুষ তো অজগরের জাত নয়
৹ মানুষ প্রাণপণে বাঁচতে চায়, কিন্তু প্রাণ তো বাঁচে না। সেইজন্যে বাঁচাবার শখ মেটাবার জন্যে এমন কিছুকে সে খুঁজে বেড়ায় যা প্রাণের চেয়ে অনেক বেশি।
৬) রেবতীর সঙ্গে দেখা করতে যাবার সময় নীলার হাতের রূপোর থালায় কী কী ছিল ?
বাদামের তক্তি – পেস্তার বরফি – চন্দ্রপুলি – ক্ষীরের ছাঁচ – মালাইয়ের বরফি – চৌকো করে কাটা ভাপা দই
৭) রেবতীকে ল্যাবরেটরি দেখানোর সময় অধ্যাপক চৌধুরী যেসব যন্ত্রপাতি দেখিয়েছিলেন তার ক্রম –
গ্যালভানোমিটার – ভ্যাকুয়ম পাম্প – মাইক্রোফোটোমিটার
৮) অধ্যাপক চৌধুরীর রেবতীকে বলা সংলাপের ক্রম –
৹ তোর জীবনীর প্রথম চ্যাপ্টারের এক কোণে আমার নামটাওছোটো অক্ষরে লেখা যদি থাকে, সেটা হবে আমার মস্ত গুরুদক্ষিণা
৹ যে মহৎ ভবিষ্যতের বাহন হওয়া উচিত ছিল ঐরাবত, কৃপণ বর্তমান চাপিয়ে দেয় তাকে গোরুর গাড়িতে, কাদায় পড়ে থাকে সে অচল হয়ে।
৹ মনে রাখিস মস্ত প্রতিভার মস্ত দায়িত্ব। ও তো কারও নিজের জিনিস নয়। ওর জবাবদিহি অনন্তকালের কাছে
৹ ডিম ফোটবার আগে কখনো হাঁস সাঁতার দেয়নি। আজ তোমার ডিমের খেলা ভাঙবে।
৯) সায়ন্স পড়ুয়া ছেলেদের দানসামগ্রী হিসাবে যা যা কেনা হয়েছে তার ক্রম –
যন্ত্র – মডেল – দামি বই – মাইক্রোস্কোপের স্লাইড – বায়োলজির নমুনা
১০) সোহিনীর বক্তব্যের ক্রম –
৹ আমি পাঞ্জাবের মেয়ে, আমার হাতে ছুরি খেলে সহজে।
৹ আমি খুন করতে পারি তা সে আমার নিজের মেয়ে হোক, আমার জামাই পদের উমেদার হোক।
৹ আমি বাঙালির মেয়ে নই, ভালোবাসা নিয়ে কেবল চোখের জল ফেলে কান্নাকাটি করি নে।
৹ ভালোবাসার জন্য প্রাণ দিতে পারি, প্রাণ নিতে পারি।
৹ আমার ল্যাবরেটরি আর আমার বুকের কলিজা, তার মাঝখানে রয়েছে এই ছুরি।
১১) চায়ের সভায় রেবতীর অবস্থার বর্ণনার ক্রম –
৹ নীলা এসে ওর গলায় মালা পরিয়ে দিলে, কপালে দিলে চন্দনের ফোঁটা।
৹ ব্রজেন্দ্রবাবু প্রস্তাব করলেন ওকে জাগানী সভার সভাপতি পদে বরণ করা হোক।
৹ সমর্থন করলেন বঙ্কুবাবু, চারিদিকে করতালির ধ্বনি উঠল।
৹ সাহিত্যিক হরিদাসবাবু ডক্টর ভট্টাচার্যের ইন্টারন্যাশানাল খ্যাতির কথা ব্যাখ্যা করলেন।
১২) সান্ধ্যভোজের বর্ণনার ক্রম –
৹ আজ সান্ধ্যভোজ একটা নামজাদা রেস্টোরাঁতে।
৹ নিমন্ত্রণকর্তা স্বয়ং রেবতী ভট্টাচার্য, তাঁর সম্মানিতা পার্শ্ববর্তিনী নীলা।
৹ সিনেমার বিখ্যাত নটী এসেছে গান গাইতে।
৹ টোস্ট প্রোপোজ করতে উঠেছে বঙ্কুবিহারী
৹ গুণগান হচ্ছে রেবতীর আর তার নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে নীলার।
১৩) নীলার সোহিনীকে সান্ধ্যভোজের বর্ণনার ক্রম –
৹ অতিথি আজ পঁয়ষট্টি জন, এ ঘরে সকলকে ধরেনি, আরেকদল আছে পাশের ঘরে।
৹ মাথা পিছু পঁচিশ টাকা ধরে নেয়, মদ না খেলেও মদের দাম ধরে দিতে হয়।
৹ খালি গেলাসের জরিমানা কম লাগল না। আর কেউ হলে মুখ চুপসে যেত।
৹ ওঁর দরাজ হাত দেখে ব্যাঙ্কের ডিরেক্টরের তাক লেগে গেছে।
৹ সিনেমার গাইয়েকে কত দিতে হয়েছে জান ? – তার এক রাত্তিরের পাওনা চারশো টাকা।