গণদেবতা উপন্যাসের নামকরণ
কলমে – নম্রতা বিশ্বাস, এম. এ , বি. এড , পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়
বিংশ শতাব্দীর একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক ছিলেন তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পর তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বাংলা উপন্যাসে সবিশেষ উল্লেখের দাবি রাখে কারণ, রাঢ়বঙ্গের বিস্তৃত ভুবনকে তিনি তাঁর উপন্যাসে যথাযথ ভাবে উপস্থাপন করেছেন। তাঁর উপন্যাসগুলি আঞ্চলিক হয়েও ভারতীয় কথাসাহিত্যে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার দাবি রাখে।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনার প্রধান বৈশিষ্ট্যই ছিল ক্ষয়িষ্ণ জমিদার পরিবারের সমস্যা ও লাভপুর সন্নিহিত অঞ্চলের সাধারণ জনজীবন। লোকায়ত ব্রাত সংস্কৃতি তাঁর পছন্দের ছিল বলে বোষ্টুম, ডোম, বাউরী, বীরবংশী, সাঁওতাল, বেদে ইত্যাদি মানুষজন ছিলেন তাঁর রচনার বিচিত্র চরিত্র।
অরুণ মুখোপাধ্যায় তাঁর ‘কালের প্রতিমা’ গ্রন্থে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাসগুলিকে পাঁচ ভাগে ভাগ করেছেন যথা –
১/ ১৯৩১ থেকে ১৯৩৭ – ‘চৈতালী ঘূর্ণি’ ১৯৩১, ‘ নীলকন্ঠ’ ১৯৩৩, ‘রাইকমল’ ১৯৩৪ , ‘পাষাণপুরী’ ১৯৩৭, ‘আগুন’ ১৯৩৭ ।
২/ ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৬ – ‘ধাত্রীদেবতা’ ১৯৩৯, ‘কালিন্দী’ ১৯৪০, ‘গণদেবতা’ ১৯৪২, ‘মন্বন্তর’ ১৯৪৪, ‘কবি’ ১৯৪৪, ‘সন্দীপন পাঠশালা’ ১৯৪৬, ‘ঝড় ও ঝড়াপাতা’ ১৯৪৬ ।
৩/ ১৯৪৭ থেকে ১৯৫৮ – ‘হাসুলীবাঁকের উপকথা’ ১৯৪৭, ‘নাগিনী কন্যার কাহিনী’ ১৯৫২, ‘আরোগ্য নিকেতন’ ১৯৫৩, ‘রাধা’ ১৯৫৮, ‘ডাকহরকরা’ ১৯৫৮ ।
৪/ ১৯৬০ থেকে ১৯৬৭ – ‘মহাশ্বেতা’ ১৯৬০, ‘নিশিপদ্ম’ ১৯৬২, ‘জঙ্গলগড়’ ১৯৬৪, ‘গন্না বেগম’ ১৯৬৫, ‘অরণ্যবন্দী’ ১৯৬৬, ‘কীর্তিহাটের কড়চা’ ১৯৬৭।
৫/ ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৩ – ‘মণি বউদি’ ১৯৬৭, ‘স্বর্গমর্ত্য’ ১৯৬৮, ‘সুতপার তপস্যা’ ১৯৭১, ‘নবদিগন্ত’ ১৯৭৩ ।
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস ও ছোটোগল্প অবলম্বনে বাংলা ভাষায় একাধিক চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে পরে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘জলসাঘর’ ও ‘অভিযান’, অজয় কর পরিচালিত ‘সপ্তপদী’, তপন সিংহ পরিচালিত ‘হাঁসুলীবাঁকের উপকথা’ এছাড়া আমাদের আলোচ্য উপন্যাস ‘গণদেবতা’ নিয়েও তরুণ মজুমদারের নির্মিত চলচ্চিত্র রয়েছে। ‘গণদেবতা’ উপন্যাসটি রচনা করে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে ‘জ্ঞানপীঠ পুরস্কার’ লাভ করেছিলেন।
‘গণদেবতা’ উপন্যাসটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এই উপন্যাসটি ভারতবর্ষের সমাজ ব্যবস্থা এবং স্বাধীনতা আন্দোলন ও শিল্পায়নের পরিপ্রেক্ষিত গ্রামীণ সমাজের বিবর্তনের উপর ভিত্তি করে রচিত। উক্ত উপন্যাসটি তৎকালীন গ্রামবাংলা তথা সমগ্র ভারতবর্ষের গ্রামীণ নিপীড়িত মানুষের প্রতিবিম্ব। এছাড়া উক্ত উপন্যাসটিতে সহস্র বছরের চলমান ধারা অর্থাৎ শাসন ও শোষণের যে প্রতিরূপ তার নিদর্শন। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করে বিস্তৃত পরবর্তী প্রায় এক দশক পর্যন্ত যে সময়কাল ছিল ‘গণদেবতা’ উপন্যাসে তাঁর চিত্র লক্ষ করা যায়। সেইসময় ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, যার প্রভাব পরেছিল শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র। অভাব ক্ষুধা যেন চারপাশ থেকে মানুষকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরেছিল। দেখা দিয়েছিল অনেক অরাজকতা ফলে ধনীরা হচ্ছিলেন আরো ধনী এবং গরীবরা হচ্ছিলেন আরো গরীব, সৃষ্টি হয়েছিল অনেক নতুন ভুঁইফোঁড় ধনীর।
উক্ত উপন্যাসটি যে গ্রামের নাম পাওয়া যায় তার নাম হল শিবকালিপুর। গ্রাম বাংলার নীরব নিভৃত গ্রাম হল এই শিবকালিপুর। উপন্যাসে লক্ষ করা যায় যেমন নতুন – পুরাতনের দ্বন্দ্ব তেমনই লক্ষ করা যায় অভাবের তাড়না। আর অভাবের মার প্রথমে পরে গরীবের উপরই। উপন্যাসের প্রথমেই লক্ষ করা যায় অর্থাভাবে কামার অনিরুদ্ধ এবং ছুতোর গিরিশ পুরনো প্রথা ভেঙে গ্রাম ছেড়ে শহরের বাজারে এসে দোকান দিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের এই কাজে গ্রামের মানুষ তাঁদের প্রতি রুষ্ট হন কারণ তাঁরা অনিরুদ্ধ ও গিরিশের কাছ থেকে যে সুযোগ সুবিধা পেত তাতে বঞ্চিত হচ্ছিল-
“এই ব্যাপার লইয়া অনিরুদ্ধ ও গিরিশের বিরুদ্ধে অসন্তোষের সীমা ছিল না।”
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামে সভা ডাকা হয় চণ্ডীমণ্ডপে। গ্রামের উঠতি ধনী শ্রীহরি পাল বা ছিরু পাল সভার মধ্যে অনিরুদ্ধর সাথে ঝামেলা করে এবং তাঁকে অপমান করে। অপমানিত অনিরুদ্ধ ছিরু পালের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে সভা ছেড়ে চলে যায় এবং পরদিন জানা যায় অনিরুদ্ধের ‘বাকুড়ির আধ-পাকা ধান’ কারা যেন লুকিয়ে কেটে নিয়ে গিয়েছে। অনিরুদ্ধ বুঝতে পারে এই কাজ ছিরু পালের কিন্তু ছিরু পালের প্রতিপত্তি ও প্রভাবের ভয়ে অনিরুদ্ধ শেষ পর্যন্ত কিছু করতে পারে না ফলে হতাশায় সে মদ্যপান ধরে এবং জৈব প্রবৃত্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে। উপন্যাসে আমরা দেবনাথ ঘোষ বা দেবুর পরিচয় পাই, সে গ্রামের সকল ভালো কাজের অংশী ও সঙ্গী বলা যায়, ছিরুপালের মতো সুযোগ সন্ধানী ব্যক্তির ক্ষমতার অপব্যাবহার ও চণ্ডীমণ্ডপের শাসন নীতির অচল অবস্থা দেখে দেবুকে দুঃখ করতে দেখা যায় ।
একসময় দেখা যায় মড়ক লেগে পুরো গ্রাম উজাড় হয়ে যায়, দেবুর পরিবারকে ধ্বংস হতে দেখা যায়। দেবনাথ ঘোষ উপলব্ধি করে প্রাচীন গ্রাম ব্যবস্থায় যেমন বিলুপ্তির পথে তেমনি নতুন প্রজন্মরাও মাথা তুলে দাঁড়াতে চাইছে। যুদ্ধ আর অস্থির সময় নতুন মানুষকে জন্ম দিয়েছে, যারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল। এই নতুন মানুষের প্রতিনিধিরা আর কেউ নন বরং রাজনৈতিক বন্দিরা। আরেক দল মানুষ ছিলেন যাঁরা অতীতের সব অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন নতুন প্রজন্মদের কাছে সেইসকল বস্তু হস্তান্তর করার জন্য যাতে নতুন – পুরাতনের মেলবন্ধন ঘটে।
উপন্যাসটির মধ্যে বিভিন্ন চরিত্রের সমাগম লক্ষ করা যায়। চরিত্রের মধ্যে পণ্ডিত দেবনাথ ঘোষ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের দাবী রাখে। নিস্তেজ, দরিদ্র আর ভয়সর্বস্ব মানুষদের গ্রাম পণ্ডিত দেবু ঘোষ প্রথম প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ জ্বালায়। সরকারী কানুগগোর অসম্মান করার প্রতিবাদে সে কারাবরণ করেছিল, কিন্তু সে চাইলে একটিবার মৌখিক ক্ষমা প্রার্থনায় দীর্ঘ ১৫ মাসের কারাগার জীবন থেকে মুক্তি পেতে পারত –
“ছোট দারোগাকে রাজী করিয়েছি খুড়ো। প্রথমে কানুনগোর ক্যাম্পে যাবে, সেখানে ব্যাপারটা মিটিয়ে নিয়ে কানুনগোর চিঠি নিয়ে যাবে সার্কেল ডেপুটির কাছে। কেস খারিজ হয়ে যাবে, আমরা বাড়ী চলে আসব।”
পণ্ডিত দেবনাথ ঘোষকে ছাড়া উপন্যাসে আর যেসকল চরিত্রের উপস্থিত লক্ষ করা যায় তাঁরা হলো অনিরুদ্ধ, শ্রীহরি, পদ্ম, দুর্গা, যতিন, গিরিশ, দেবুর স্ত্রী বিলু, যোগেন ডাক্তার, ব্রাহ্মণ হরেন ঘোষাল এবং স্বৈরিনী দুর্গা প্রমুখ চরিত্র। কিন্তু উপন্যাসটিতে নায়ক আর খলনায়ক খুঁজতে গেলেও সমস্যা দেখা দেয়, কারণ উপন্যাসটিতে এতোগুলি চরিত্র যে কাকে নায়ক করা হবে আর কাকে খলনায়ক করা হবে সেটাই গভীর প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। উপন্যাসটি বিশ্লেষণ করলে অবশ্য দেখা যায় সময়ই এখানে নায়ক ও খলনায়কের ভূমিকায় বর্তমান।
সময়ের ধারায় পারিবারিক পেশা ছেড়ে নতুন পেশার দিকে ধাবিত হওয়া আবার আর্থিক স্বচ্ছলতার কারণে পারিবারিক নাম – ধাম – পদবী পরিবর্তন করে নতুন নামে প্রভাব খাটানো সেই নতুন সময়কালকে ইঙ্গিত করে। যতিনের স্বদেশী আন্দোলনের ক্ষাণিক ঝংকার একটু হলেও পাঠকের মনকে নাড়া দিয়ে যায়। তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় এই উপন্যাসে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকেন্দ্রিক হলেও উক্ত উপন্যাসটি মূলত তৎকালীন বৃহত্তর সমাজকেই চিহ্নিত করে, যেখানে মূলত জনগণই সর্বেসর্বা। ফলে সময়ের থেকেও যাঁদের উপর কেন্দ্র করে উপন্যাসটি রচিত হয়েছে তাঁরা হলেন জনগণ।
এই পরিপ্রেক্ষিতে উপন্যাসটির নামকরণের উপর নজর দিলে দেখা যায়, ‘গণদেবতা’ -এর বাংলা অভিধানে দুটি অর্থ লক্ষ করা যায় –
● প্রথম অর্থ হল সমাজের জনগণই হল দেবতা অর্থাৎ ক্ষমতার অধিকারী।
● দ্বিতীয় অর্থ দাঁড়ায় গণশক্তির অধিদেবতা, উক্ত উপন্যাসটিতে দ্বিতীয় অর্থটাই বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য ‘গণ’ শব্দটির অর্থ করেছেন –
“যাহার মিলিতভাবে এক কার্য্য দ্বারা জীবিকার্জন করে, সমবায়, সঙ্ঘ…….. গণপতি , গনেশ, মহাদেব।”
আর ‘গণদেবতা’ শব্দটির ব্যাখ্যা করা হয়েছে এইরূপ – “গণভূতা বা সঙ্ঘভূতা দেবতা; আদিত্যাদি দেবগণের সমষ্টিভূত দেবগণবিশেষ।…….আদিত্য, বিশ্বদেব, বসু, তুষিত, আভাস্বর, অনিল, মহারাজিক, সাধ্য, রুদ্র, সর্বসুদ্ধ, গণদেবতাগণ।”
তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় পৌরাণিক কোনো দেবতাকে অবশ্য আলোচ্য উপন্যাসটিতে উপস্থিত ঘটাননি, তিনি গণদেবতা উপন্যাসটিতে দেখাতে চেয়েছেন ব্যক্তিজীবনকীভাবে গোষ্ঠীজীবনে পরিণত হয়ে ওঠে তার স্বরূপ। চণ্ডীমণ্ডপকে কেন্দ্র করে গ্রাম্যজীবনের অন্তরালে ফল্গুধারার মতো বয়ে যাওয়া গ্রাম্য রাজনীতিকে ঔপন্যাসিক বিস্তৃতপটে অঙ্কন করেছেন।
‘গণদেবতা’ উপন্যাসটি প্রথম গ্রন্থ আকারে বেরনোর সময় প্রথম সংস্করণের ভূমিকায় তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন,
“গণদেবতা’ বইখানি ‘ভারতবর্ষে’ ধারাবাহিক ভাবে বাহির হইতেছে। এটি তাহার অংশবিশেষ ‘চণ্ডীমণ্ডপ’ নামাঙ্কিত অংশ। দ্বিতীয় অংশ ‘পঞ্চগ্রাম’ নামে বাহির হইতেছে। ‘ভারতবর্ষে যাঁহারা ‘চণ্ডীমণ্ডপ’ পড়িয়াছেন, তাঁহারা দেখিবেন, ‘ভারতবর্ষে’ প্রকাশিত ‘চণ্ডীমণ্ডপ’ ও বর্তমান বইখানি প্রায় সম্পূর্ণ পৃথক। গোড়ার আশি পৃষ্ঠা পুস্তকাকারে মুদ্রিত হইবার পর একাশি পৃষ্ঠা হইতে অবশিষ্টাংশ সম্পূর্ণ নতুন। প্রয়োজনবধে পরিবর্তন করিতে বসিয়া সমস্তই পাল্টাইয়া গেল। প্রায় প্রতিটি ছত্র নতুন বলিলে অত্যুক্তি হইবে না।”
সুতরাং উপন্যাসটির প্রথম ‘চণ্ডীমণ্ডপ’ নাম থাকলেও পরবর্তীতে তার নাম রাখা হয় ‘গণদেবতা’। জনগণই সমস্ত কিছুর জন্য দায়ী স্বীকার করে নিয়েছেন উক্ত উপন্যাসটিতে। এই চণ্ডীমণ্ডপকে ঘিরেই বসতো সবরকম সভা যাকে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা বলা হয়ে থাকে, গ্রামের মানুষদের ভালো মন্দ বিচারের জন্য এই ব্যবস্থার উৎপত্তি। আলোচ্য উপন্যাসের প্রথমেই এই ব্যবস্থার সাথে পরিচয় ঘটে, এই সভার প্রধান ছিলেন দ্বারকা চৌধুরী যাঁর পূর্বপুরুষেরা ছিল দুই গ্রামের জমিদার কিন্তু তাঁর সময় আসতে আসতে তিনি পরিণত হয়েছিলেন সম্পন্ন চাষী রূপে। সভায় ছিরুপালের বর্ণনা পাওয়া যায় যে সাধারণ থেকে উঠতি ধনী হয়ে উঠেছিল গ্রামের। ফলে বলা যেতেই পারে দ্বারকা চৌধুরীল পতন আর ছিরুপালের উত্থান আসলে ক্ষয়িষ্ণু জমিদারতন্ত্রের অবসান ঘটানোর ইঙ্গিত তাঁর পাশাপাশি পঞ্চায়েত ব্যবস্থার অবসানও বলা যায়।
‘চণ্ডীমণ্ডপ’ উপন্যাসের প্রথমে গুরুত্ব পেলেও শেষ পর্যন্ত তার গুরুত্বের হ্রাস ঘটে। শেষ পর্যন্ত উপন্যাসে জনগণই হয়ে উঠেছে মূল উপজীব্য। ফলে ‘গণদেবতা’ নামটি নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। ঔপন্যাসিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় ‘গণদেবতা’ নামকরণের মধ্য দিয়ে উক্ত উপন্যাসটির মূল বিষয়বস্তুকে ভালো করে পাঠক সমাজকে বুঝিয়ে দিয়েছেন ফলে উক্ত নামকরণটি হয়ে উঠেছে উপন্যাসটির সার্থক ‘নামকরণ’।