১) অভিনব উদ‍্যোগ শিক্ষক দিবস পালন ওন্দায়,
প্রশংসায় পঞ্চমুখ আইনি অধিকর্তাসহ জনসমাজ


বিশেষ সংবাদদাতা, ওন্দা, বাঁকুড়া, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩:  ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিনকে প্রাধান্য দিয়েই বাংলা সহ অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও শিক্ষক দিবস পালন করা হয়ে থাকে প্রতিটি বর্ষের ৫ ই সেপ্টেম্বর দিনটিকে। ২০২৩ বর্ষের ৫ ই সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দিনটিকে ভিন্নভাবে পালন করে নজর কেড়েছে গভারমেন্ট মডেল স্কুল ওন্দা বিদ্যালয়টি। বাঁকুড়া জেলার ওন্দা ব্লকের অন্তর্গত দুবড়াকোন গ্রামে অবস্থিত গভারমেন্ট মডেল স্কুল ওন্দা বিদ্যালয়টি ৫ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ দিনটিকে শিক্ষক দিবস হিসেবে কেন্দ্র করে দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ার সুপ্রচেষ্টায় মুগ্ধ জনসমাজ। এবং ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষক দিবস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট (D.M) মাধুরী চক্রবর্তী সহ সংশ্লিষ্ট ওন্দা ব্লকের ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার (B.D.O) মানব অধিকারী মহাশয়েরা বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের কার্যাবলী এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কার্যাবলীতেও মুগ্ধ এবং প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

           ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এর জন্মদিন পালন করার পর ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা নিজেরাই স্কুলের শিক্ষকদের যাবতীয় কর্ম সম্পাদনার দায়িত্ব নেয়। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির খাতা পূরণ থেকে শুরু করে স্কুলের শ্রেণীর পঠন-পাঠনের দায়িত্ব নেয় ওই স্কুলেরই নবম ও দশম শ্রেণির ৬ জন ছাত্রছাত্রী – অভিজিত ঘোষ, সৌমজিৎ পাল, দীপঙ্কর দত্ত, রিভু পাল, নূপুর ঘোষ ও সুস্মিতা ঘোষ। তাদের পঠন-পাঠন এবং কার্যাবলী পরিসমাপ্তির পর শিক্ষকদের উপহার স্বরূপ তারা পরিবেশের সহায়ক বন্ধু হিসেবে শিক্ষকদের হাতে তুলে দেয় একটি করে চারা গাছ।

এছাড়াও ঐদিন স্কুলের শিক্ষকরাও ছাত্র-ছাত্রীদেরকে মিষ্টিমুখ করানোর ক্ষেত্রে প্লাস্টিক ব্যবহার বর্জন করে শালপাতার  ঠোঙা ব্যবহার করেন। এছাড়াও মিড ডে মিলের খাবার খাওয়ার সময়ও থার্মোকলের পাতার  বদলে ব্যবহার করেন শাল পাতার পাতা। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বাঁকুড়া জেলার ম্যাজিস্ট্রেট (D.M)  শ্রীমতি মাধুরী চক্রবর্তী এবং সংশ্লিষ্ট ওন্দা ব্লকের ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার (B.D.O) মানব অধিকারী মহাশয় এই ঘটনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ।

বাঁকুড়া জেলার ম্যাজিস্ট্রেট (D.M)  শ্রীমতি মাধুরী চক্রবর্তী জানান, “এইভাবে অনুষ্ঠান করার সময় যদি অনুষ্ঠানকারীরা পরিবেশের দিকটাকে মাথায় রাখতো তাহলে আমাদের পরিবেশ দূষণের বোঝাটা অনেকাংশে কমানো যেত।”  এছাড়াও সংশ্লিষ্ট ওন্দা ব্লকের ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার (B.D.O) মানব অধিকারী মহাশয় জানান, “সিগারেট প্যাকেটে স্মোকিং কজেস ক্যান্সার কথাটা লেখা থাকলেও, আমরা সিগারেটের প্রতি আসক্ত। দৃষ্টান্তের মাধ্যমে জনপ্রতিরোধ গড়ে তোলা যায় না। প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সমাজ সচেতনতা এবং প্রকৃত শিক্ষা। যা এই মডেল স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিকশিত হয়েছে। এই কার্যাবলী দেখে পারিপার্শ্বিক সমাজেরও শিক্ষা নেওয়া উচিত।” এছাড়াও এই বিদ্যালয়েরই প্রধান শিক্ষক শিলাদিত্য চ্যাটার্জি জানান “আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে চারা গাছের মতো এমন এক পরিবেশ বন্ধু উপহার পেয়ে সত্যি গর্বিত এবং আনন্দিত।”

২) মিড ডে মিল খেয়ে অসুস্থ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী,
বিক্ষোভ অভিভাবকদের


বিশেষ সংবাদদাতা, রতনপুর, বাঁকুড়া ২৩ আগস্ট ২০২৩:    রতনপুর অঞ্চলের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হল দুবড়াকোন প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানকার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা আগামী ২২ আগস্ট স্কুলে মিড ডে মিল খাওয়ার পর গুরুতর ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঐদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিল শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী তারা স্কুলের মিড ডে মিল খাওয়ার কয়েক ঘন্টা পর থেকেই হয়ে পড়ে গুরুতরভাবে অসুস্থ। মিড ডে মিল খাবার এক দেড় ঘন্টা পর থেকেই ছাত্রছাত্রীদের শুরু হয় পেটে ব্যথা বমি এবং পায়খানা। এইভাবে প্রথমে ১০-১২ জন ছাত্রছাত্রী অসুস্থ হবার পর স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সার মহাশয় ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবক অভিভাবিকাদের খবর দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। ইতিমধ্যেই স্কুলের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীরাও  একই রকম ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং এই সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী দেরকেউ তাদের অভিভাবক অভিভাবিকা দের খবর দিয়ে নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই প্রধান শিক্ষক সহ আরো দুইজন শিক্ষককে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে আটক করে রেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবক অভিভাবিকা সমেত স্থানীয় মানুষজনেরা। এই গ্রামেরই স্থানীয় বাসিন্দা শ্রী নিত্যানন্দ মুখার্জি মহাশয় জানিয়েছেন, “রাধুনীরা রান্নার প্রতি মনোযোগী নয় তারা ব্যস্ত থাকেন তাদের স্মার্টফোনের ফেসবুক নামক সফটওয়্যারটির ওপর।” এছাড়াও ওই স্কুলেরই একজন ছাত্রের অভিভাবক শ্রী বুদ্ধদেব কুমার মুখার্জি জানান, “স্কুলের প্রধান শিক্ষক সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা যদি স্মার্টফোনে ডুবে থাকে, তাহলে ক্লাসের পঠন-পাঠনের এবং রান্নার প্রতি মনোযোগ আসবে কোথা থেকে?”

স্থানীয় যুব তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা শ্রী মলয় কুমার মুখুটী মহাশয় এসে ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবক অভিভাবিকাদের  সমস্তকিছু বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে শিক্ষকদের মুক্ত করেন বদ্ধ ঘরে থেকে।

প্রধান শিক্ষক শ্রী দীপক কুমার সার মহাশয় জানিয়েছেন, “আজ স্কুলের কাজে প্রচুর ব্যস্ত থাকার কারণে আজ রান্নার প্রতি মনোযোগ দিতে পারিনি।” স্থানীয় হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার বিজন সিং এর মতে, “খাবারের বিষক্রিয়ার জন্যই ছাত্রছাত্রীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।”


কলমে:- অভিজিত ঘোষ ( বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় )