১) পড়াশোনায় মোবাইল ফোনের প্রয়োজনীয়তা – দুই বন্ধুর কাল্পনিক সংলাপ:

বৃষ্টি-  কীরে বর্ষা কেমন আছিস?

বর্ষা-  এইতো চলছে, তারপর তোর খবর কী?

বৃষ্টি-  আমার আর খবর! আমারও চলছে ঐ একরকম।

বর্ষা-  তারপর শুনলাম তুই নাকি একটা স্মার্টফোন নিয়েছিস?

বৃষ্টি-   হ্যাঁ রে বর্ষা তুই ঠিকই শুনেছিস। আসলে আমি তো টিউশন পড়ি না, মোবাইলটা থেকে অনেকটা হেল্প পাবো।

বর্ষা-  কী বলছিসটা কী? মোবাইল দিয়ে কখনো আবার পড়াশোনা হয়?

বৃষ্টি-  হ্যাঁরে। মোবাইল দিয়ে তো আমি অনেক ই-বুক ডাউনলোড করে পড়াশোনা করতে পারছি।

বর্ষা-  কিন্তু, মোবাইল থাকলেই তো ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোস্যাল মিডিয়াগুলিতে অ্যাডিক্টেড হয়ে পড়বি।

বৃষ্টি-  নারে, এখন ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়াগুলিতে বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে অনলাইনে পড়াশোনার একটা সুবিধা রয়েছে।

বর্ষা-  তবুও মোবাইলের থেকে বিভিন্ন খারাপ ছবি আর খারাপ ভিডিও দেখার পর মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবি তো।

বৃষ্টি-  যে যেভাবে ব্যবহার করবে মোবাইল ফোনকে তার কাছে সেভাবেই ধরা দেবে স্মার্টফোন। আর তাছাড়া মোবাইলকে ব্যবহারের কুফলগুলির দিকেই লক্ষ্য করেছিস তুই, সুফলগুলি দেখিসনি।

বর্ষা-  আরে না রে, তাছাড়াও ইউটিউবেও অনেক খারাপ ভিডিওতে আসক্ত হয়ে পড়ছে ছাত্রছাত্রীরা।

বৃষ্টি-  নারে, ইউটিউবে এখন অনেক অনলাইন ফ্রী কোচিং ক্লাস হয়, যেগুলো থেকে নিজেকে অনেকটাই ইমপ্রুভ করতে পারবো।

বর্ষা-  ও, তাই নাকি! এখন ইউটিউবেও ক্লাস হয়! এটা তো আমি জানতাম না রে।

বৃষ্টি-  হ্যাঁরে। আচ্ছা তাহলে আজ আসি সন্ধ্যে হয়ে এল। বাড়ি না ফিরলে মা চিন্তা করবে।

বর্ষা-  হ্যাঁরে। মোবাইল সম্পর্কে আমি খারাপ দিকগুলোই জানতাম। ভালো দিকগুলো জানতাম না। আচ্ছা ঠিক আছে আয় তাহলে, আমিও আসি। আবার পরে কথা হবে।

২) পাশ ফেল এর গুরুত্ব : দুই বন্ধুর কাল্পনিক সংলাপ

দিনেশ:- কীরে অভি, অনেকদিন বাদ দেখা হল। কেমন আছিস বল?

অভি:-  হ্যাঁ রে ভাই। আমি তো ভালোই আছি। তুই কেমন আছিস?

দীনেশ:- আমারও চলে যাচ্ছে বুঝলি। তারপর পরীক্ষায় কেমন নম্বর হলো রে?

অভি:- খুব একটা ভালো রেজাল্ট করতে পারিনি বুঝলি ভাই। ওই ৬৪ শতাংশ নম্বর হয়েছে। তার মধ্যে ভৌতবিজ্ঞান আর অঙ্কে তো কোন রকম টেনেটুনে পাস করেছি। কিন্তু ভাই অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাস ফেল না থাকার কারণে এত চিন্তা থাকেনি।

দিনেশ:-  কি যে বলিস ভাই। পাস ফেল আছে বলেই তো তুই পড়াশোনা করেছিস। আর ওই ৬৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছিস। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাশ ফেল ছিল না বলেই তো ভালোভাবে পড়াশোনা করিস নি। তাই তো অংক আর ভৌত বিজ্ঞানের মত বিষয়গুলোতে নম্বর বেশি পাস নি।

অভি:- দূর ভাই! অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাসফেল ছিল না বলেই মাথায় কোন চাপ থাকেনি। আর পড়াশোনাও বেশ ভালোভাবেই চলছিল।

দীনেশ:- নারে অভি। শিক্ষা ক্ষেত্রে পাশ ফেল এর গুরুত্ব আছে, এবং পাস ফেল অবশ্যই প্রয়োজনীয়। আর তাছাড়াও অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত তো আমরা ছোট ছিলাম। কিন্তু এখন তো আমরা আর ছোট নই, এখন আমরা বড় হয়েছি। আর তাছাড়া এবার তো আর পাস ফেলের গুরুত্ব না বুঝলে, আগামী দিনের যে যোগ্যতার পরিচয় গুলো আছে, তাতে তো আর নিজেদেরকে টিকিয়ে রাখতে পারব না।

অভি:-  তা ঠিক। কিন্তু পাশ ফেল না থাকলে ভাবনা আর চিন্তা থাকতো না মাথায়। তাহলে লেখাপড়া আরো ভালো হতো।

দিনেশ:-  কিন্তু ভেবে দেখ অভি, যদি পাশ ফেল না থাকে তাহলে তো আমরা যখন চাকরির পরীক্ষা দেব তখন প্রার্থী বাছাইয়ের সময় তো অধিকর্তারা যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নেবেন। তখন কিন্তু আমরা মানে পড়াশোনায় দুর্বল ছাত্রছাত্রীরা কিন্তু তাদের লিস্ট থেকে ঠিকই বাদ পড়ে যাব।

অভি:- হ্যাঁ, তুই ঠিকই বলেছিস। এটা তো আগে ভেবে দেখিনি। যাইহোক এবার থেকে পাশ ফেল এর গুরুত্ব বুঝে আরো ভালোভাবে পড়াশোনা শুরু করতে হবে।

দিনেশ:- হ্যাঁ এইতো তুই ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিস। আচ্ছা, সন্ধ্যা হয়ে গেল। আমি আসি রে অভি, নইলে মা আবার চিন্তা করবে। পরে কথা হবে।

অভি:-  হ্যাঁ রে ভাই আমিও আসি। আমিও এবার পড়তে বসবো। আচ্ছা চলি তাহলে, আবার পরে কথা হবে।

কলমে – অভিজিত ঘোষ ( বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় )